পর্ব ::৬৬
পূর্বে প্রকাশিতের পর
অর্থনীতিবিদরা দলের রাজনৈতিক দর্শন ও অর্থনৈতিক আদর্শ নির্ধারণে মুখ্য ভূমিকা পালন করেননি এক্ষেত্রে। রাজনীতিবিদরাই এখানে মুখ্য ও নির্ধারক ভূমিকা পালন করেছেন। ১৯৬৪ সালের পুনরুজ্জীবিত পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের ম্যানিফেস্টো পাঠ করলে এ নিয়ে কোনোই সন্দেহ থাকে না। ১৯৬৬ সালের ৬ দফা কর্মসূচি প্রণয়নের ক্ষেত্রেও রাজনীতিবিদদের, নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে শেখ মুজিবের, মূল ও নির্ধারক ভূমিকা ছিল। এ কথা খাটে ১৯৬৪ সালের ম্যানিফেস্টোর ক্ষেত্রেও। গুরুত্ব বিবেচনা করে পুরো উদ্ৃব্দতিটাই আমি এখানে তুলে ধরতে চাই। দলের অর্থনৈতিক আদর্শ হিসেবে বলা হয়েছিল :
‘আওয়ামী লীগের আদর্শ শোষণহীন সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করা। সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার মাধ্যমেই বর্তমানের শোষণ, বৈষম্য ও দুর্দশার হাত হইতে মুক্তিলাভ করা সম্ভব বলিয়া আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে। মূল শিল্পগুলিকে, যথা- খনিজ শিল্প, যুদ্ধের অস্ত্র-সরঞ্জাম শিল্প, বিদ্যুৎ ও রাসায়নিক শিল্পকে জাতীয়করণ করিতে হইবে এবং ইহাদের পরিচালনার ভার রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে গঠিত ও পরিচালিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উপর ন্যস্ত করা হইবে। ব্যাংক, বীমা, গুরুত্বপূর্ণ যানবাহন প্রভৃতি প্রত্যক্ষ জনস্বার্থমূলক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আবশ্যকবোধে জাতীয়করণ করা হইবে। শিল্পে ও ব্যবসায় কোনো প্রকারের একচেটিয়া অধিকার স্বীকার করা হইবে না।’
বলা বাহুল্য, এই দাবিগুলির অনেক কিছুই ১৯৪৯ সালের পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের ইতিপূর্বে আলোচিত ম্যানিফেস্টোতে বীজ হিসেবে বপন করা হয়েছিল। তবে এর আগে কোনো দলিলেই এত স্পষ্ট করে বলা হয়নি যে, ‘সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার মাধ্যমেই বর্তমানের শোষণ, বৈষম্য ও দুদর্শার হাত হইতে মুক্তি লাভ করা সম্ভব।’ তবে এই সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা বলতে ঠিক কোন ধরনের ব্যবস্থা তা অবশ্য দলিলে স্পষ্ট করা হয়নি। তবে এটি যে স্তালিন আমলের সমাজতন্ত্র নয়, সেটি এর ‘মৌলিক অধিকার’ ও ‘ব্যক্তিস্বাধীনতা’ অধ্যায় থেকেই সুস্পষ্ট হয়। এই দুটি অধ্যায়ে ‘লিবার্টি প্রিন্সিপালকে’ সবার উপরে স্থান দেওয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে, ‘একমাত্র যুদ্ধকালীন সময় ব্যতীত অন্য কোনো সময়ে এই সকল অধিকার খর্ব করা হইবে না।’ এই দলিলে আবারো মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, ‘লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রচিত না হইলে কোনো শাসনতন্ত্র জনগণের নিকট গ্রহণযোগ্য হইবে না।’ এবং ২১ দফা অনুসরণ করে বলা হয়েছে যে, এমন শাসনতন্ত্র চাই যা ‘অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে, শাসনকার্যে এবং দেশরক্ষার ব্যাপারে পাকিস্তানের উভয় অঞ্চলকে পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন প্রদান’ করবে। অর্থাৎ সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার কথা বলা হলেও একটি ফেডারেল ‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের’ কাঠামোতেই তা বাস্তবায়ন সম্ভব, এমন বিশ্বাস ছিল ১৯৬৪ সালের ম্যানিফেস্টোর প্রণেতাদের। এই দলিল পাঠে বরং উল্টো প্রশ্ন দাঁড়ায় যে, কেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে বৃহৎ ও পরিত্যক্ত শিল্পের ‘জাতীয়করণ’ নিয়ে এত পানি ঘোলা করার অপচেষ্টা করা হয়েছিল কোনো কোনো মহল থেকে? সেইসব বিরুদ্ধ সমালোচকরা কি জানতেন না যে, পুনরুজ্জীবিত আওয়ামী লীগের ১৯৬৪ সালের ম্যানিফেস্টোতেই ছিল দেশের বৃহৎ ও মূল শিল্পকে ‘জাতীয়করণ’ (Nationalisation) করার কথা? অর্থাৎ শেষোক্ত নীতি ১৯৭২ সালের কোনো হঠাৎ আবিস্কার নয়। শুধু মূল শিল্প নয়, ব্যাংক-বীমাসহ বিভিন্ন ‘প্রত্যক্ষ জনস্বার্থমূলক’ প্রতিষ্ঠানকে ‘আবশ্যকবোধে জাতীয়করণ করা’ হবে- এ ছিল আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনেরই ঘোষিত অর্থনৈতিক আদর্শ ও কর্মসূচির অংশ। এবং সেটা এসেছিল-তৎকালীন পরিস্থিতিতে-সমতামুখীন অর্থনীতি গড়ার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।
১৯৬৪ সালের উপরোক্ত দলিলে অর্থনৈতিক আদর্শের অংশ হিসেবে ‘দুই অর্থনীতির’ প্রসঙ্গও অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক বৈষম্য ছিল ১৯৫২ সালের পর থেকেই একটি বহুল আলোচিত বিষয়। এই বৈষম্যের আলোচনাটিকে নীতিনির্ধারক এবং রাজনৈতিক মহলে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে সেকালের প্রাগ্রসর বাঙালি জাতীয়তাবাদী অর্থনীতিবিদেরাও একটি তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। কেননা, এটি উন্নয়ন অর্থশাস্ত্রের একটি স্বীকৃত বিষয় ছিল এবং এর গুরুত্ব বাঙালি অর্থনীতিবিদরা স্বাভাবিক কারণেই অনুধাবন করেছিলেন। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারও বিষয়টির গুরুত্ব এক পর্যায়ে কিছুটা হলেও (অন্ততঃ লোক দেখানোর জন্যে হলেও) অনুভব করেছিলেন। এরই প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে পূর্ব-পশ্চিমের বৈষম্যের গতিপ্রকৃতি মনিটর করার জন্য একাধিক কমিশন গঠন করা হয়।
প্রতিটি পাঁচসালা পরিকল্পনার মধ্যে পূর্ব-পশ্চিমের মধ্যকার অর্থনৈতিক বৈষম্য বাড়ছে নাকি কমছে- এটা তলিয়ে দেখা ছিল এসব কমিশনের কাজ। এর মধ্যে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান উভয় অংশ থেকেই শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদরা যোগ দিতেন কমিশনের সদস্য হিসেবে। কীভাবে ‘দুই অর্থনীতি’ বিষয়ক বৈষম্য নিয়ে পেশাদার অর্থনীতিবিদদের কাজকর্ম পরিচালিত হতো এবং পরোক্ষভাবে তা জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক ডিসকোর্সের ওপর প্রভাব ফেলত তার একটি বিবরণ নুরুল ইসলামের ২০১৭ সালে প্রকাশিত স্মৃতিকথা থেকে পাওয়া যায় :
‘In mid-1950, there was already a great deal of unhappiness among the educated middle class about the underdevelopment of East Pakistan. This awareness was particularly acute among the economists who analysed the extent and nature of economic disparity and used to write and speak about it in their meetings and conferences. The first organized expresion of such reencutment took place in 1956 when they submitted a report at the conference of East Pakistan on the First Five Year plan of Pakistan. They enunciated that Pakistan was not one economy but consisted of two economies. They recommended a set of special measures to remove the economic disparity!’ যে প্রতিবেদনের কথা বলা হয়েছে এখানে, তার প্রস্তুতির কাজে নুরুল ইসলামের সক্রিয় অবদান ছিল। এসব জ্ঞানগত উদ্যোগের ফল পরিণামে পাকিস্তান সরকার এক পর্যায়ে বাধ্য হয় স্থায়ীভাবে ‘Finance Commissions on ‘East-West Income Disparity’ এবং ‘Inter-regional Economic Policies and Resource Allocations’ গঠন করতে। ফাইন্যান্স কমিশনের বাইরেও যেসব অর্থনীতিবিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন, তারাও এই পূর্ব-পশ্চিম আঞ্চলিক বৈষম্য বিতর্কে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। এর মধ্যে বিশেষভাবে নজর কাড়ে ১৯৬১ সালের জুন মাসে ডাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে অনুষ্ঠিত একটি সেমিনার। হাবিবুর রহমান, নুরুল ইসলাম, রেহমান সোবহান প্রমুখ সেখানে প্রবন্ধ পাঠ করেন। হাবিবুর রহমান পাকিস্তান প্ল্যানিং কমিশনে কর্মরত ছিলেন লাহোরে। সরকারি চাকরির ঝুঁকি নিয়েও তিনি পূর্ব-পশ্চিম বৈষম্যের বিষয়ে তার অর্থনৈতিক বিচার-বিশ্নেষণ তুলে ধরেন। তার উত্থাপিত প্রবন্ধের নাম ছিল ‘Two Economies in Pakistan’- ১৯৬১ সালের ২রা মে-তে লেখা। এছাড়াও তিনি ১৯৬১ সালের ১ আগস্ট ‘The case for Separating the Economies of East and West Pakistan’ নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ প্রস্তুত করেন। ১৯৬২ সালে মাত্র ৪৬ বছর বয়সে মৃত্যুর আগে তিনি একটি গ্রন্থ রচনা করেন, যার নাম ‘Growth Models and Pakistan’। বাঙালি এই অর্থনীতিবিদ পাকিস্তান পরিকল্পনা কমিশনের ‘ইকোনমিক রিসার্চ’ সেকশনের এবং সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের প্রধান হিসেবে যুগপৎ দায়িত্বে ছিলেন। সরকারি চাকরিতে থেকেও ‘দুই অর্থনীতি’ বিষয়ে তার উপরোক্ত দুটি প্রবন্ধ রচনা করেছিলেন এবং জেনারেল আইয়ুব খানের রোষের শিকার হন। এই পথিকৃৎ বাঙালি জাতীয়তাবাদী অর্থনীতিবিদের জীবন ও কর্মের ওপরে আরও বড় পরিসরে কাজ হওয়া উচিত। সামগ্রিকভাবে ‘দুই অর্থনীতি’ সংক্রান্ত আলোচনায় যারা ভূমিকা পালন করেছিলেন তাদের মধ্যে নুরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, আখলাকুর রহমান, মোশারফ হোসেন, রেহমান সোবহান, আনিসুর রহমান প্রত্যেকের জীবন ও কর্মের ওপর বস্তুনিষ্ঠ গবেষণা হওয়া দরকার।
যাহোক, কার্জন হলের সেই বিখ্যাত সেমিনারে গঠিত রেহমান সোবহানের প্রবন্ধটি পরদিন মিডিয়ার হেডলাইন হয়েছিল। এ সম্পর্কে রেহমান সোবহান এভাবে স্মৃতিচারণা করেছেন ‘The next morning, I opened the Pakistan observer to read a fornt page headline, ‘Rehman Sobhan says Pakistan has two economies.’ সেদিন কাকতালীয়ভাবে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন আইয়ুব খান। কার্জন হলের সেমিনারের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা তাকে জিজ্ঞেস করলেন- ‘দুই অর্থনীতি’ বিষয়ে আপনি কি মনে করেন? উত্তরে জেনারেল আইয়ুব বললেন,‘Pakistan has only one economy.’ পূর্ব-পশ্চিমের মধ্যকার আঞ্চলিক বৈষম্যের বিষয়টি পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনীতিবিদেরাও এক সময় স্বীকার করে নিয়েছিলেন। পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনীতিবিদদের নেতৃত্ব দানকারী মাহবুব উল হক তার ১৯৬৩ সালের ‘দ্য স্ট্র্যাটেজি অব ইকোনমিক প্ল্যানিং’ বইতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন পাকিস্তানে পূর্ব-পশ্চিম অংশের মধ্যকার আঞ্চলিক বৈষম্যের ওপর।
আগেই বলেছি, অর্থনীতিবিদরা ‘দুই অর্থনীতি’ শক্তিশালী যুক্তিজাল বিভিন্ন সেমিনারে-কনফারেন্সে তুলে ধরেছিলেন, যদিও জনসমক্ষে এর সপক্ষে প্রচার-আলোচনা-মতামত গঠন করেন রাজনীতিবিদরাই। দুই অঞ্চলের মধ্যে আয়-বৈষম্য ও সম্পদ বরাদ্দ বৈষম্য শুধু নয়, বৈষম্যের সাথে সাথে বঞ্চনার রাজনৈতিক ও সামাজিক অনুভূতি তারা প্রকাশ করেন দেশবাসীর সামনে। Theory-র সাথে Praxis-র যুগল সম্মিলনের এটি একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। উপরোক্ত বিষয়ে ১৯৬৪ সালের উপরোক্ত দলিলেই বলা হয়েছিল :
‘কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চপদসমূহে পশ্চিম পাকিস্তানিদের প্রায় একচেটিয়া অধিকার ও প্রাধান্য বর্তমান। সরকার ব্যক্তিগত শিল্প ও শিল্পপতিকে সাহায্যের নীতি গ্রহণ করায় উক্ত উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের সহানুভূতিতে ও পক্ষপাতিত্বে পশ্চিম পাকিস্তানে ব্যক্তিগত শিল্প ব্যাপকভাবে গড়িয়া উঠিয়াছে। তদুপরি, পাবলিক সেক্টরেও সিংহভাগ পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়োজিত হইয়াছে। ফলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে পর্বতপ্রমাণ বৈষম্য সৃষ্টি হইয়াছে। এই অবস্থার প্রতিরোধ ও প্রতিকারকল্পে এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন অংশের মধ্যে ন্যায়-নীতি প্রতিষ্ঠা করিবার উদ্দেশ্যে শিল্প ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট (Earmarked) অর্থ পাবলিক সেক্টরে নিয়োজিত করিবার নীতি গ্রহণ করিতে হইবে। এবং পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণের উদ্দেশ্যে দুই অর্থনীতির ভিত্তিতে একটা দীর্ঘকালীন ও কার্যকরী পরিকল্পনা গ্রহণ করিতে হইবে।’
উপরে উদ্ৃব্দত স্তবকে অর্থনৈতিক চিন্তার ছাপ স্পষ্ট, কিন্তু তার প্রকাশ হয়েছে রাজনৈতিক ভাষায়, যেখানে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের দুই অঞ্চলের মধ্যে ‘পর্বতপ্রমাণ বৈষম্য’ সৃষ্টির কথা। এর থেকে যে এক সময়ে ৬ দফা বেরিয়ে আসবে, এতে আর বিস্ময় কী! শেখ মুজিবের অসামান্য রাজনৈতিক প্রতিভা এখানেই। একটি যুক্তিনিষ্ঠ অর্থনৈতিক বিশ্নেষণ থেকে তিনি রাজনৈতিক আন্দোলনের ‘Logical Next-step’ হিসেবে ‘ছয় দফা’ কর্মসূচিকে বের করে আনতে পেরেছিলেন। ১৯৬৪ সালের পুনরুজ্জীবিত আওয়ামী লীগের ম্যানিফেস্টো থেকে ছয় দফা কর্মসূচিতে উত্তরণ ছিল সেরকম প্রত্যাশিত একটি যৌক্তিক উত্তরণ। এই ছয় দফা কর্মসূচির দলিল রাজনীতিবিদেরই চিন্তা, অভিজ্ঞতা ও শ্রমের ফসল। বঙ্গবন্ধু ও তার রাজনৈতিক সহকর্মীরাই এই দলিল প্রস্তুত করেন। কিন্তু রাজনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় এতে মূল ও নির্ধারক ভূমিকা পালন করেছিলেন শেখ মুজিব স্বয়ং। অর্থনীতিবিদরা এর নির্মাণে সরাসরিভাবে কোনো ভূমিকা রাখেননি। অধ্যাপক নুরুল ইসলাম একাধিক আলাপচারিতায় এ ব্যাপারে আমাকে নিশ্চিত করেছেন। কার্যতও ৬ দফা কর্মসূচি সংবলিত মূল দলিলের- ‘আমাদের বাঁচার দাবি : ৬-দফা কর্মসূচি’র লেখক ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান এবং তারই পরিচিতিতে ও বয়ানে দলিলটি দেশ-জাতির কাছে উত্থাপিত হয়।
[ক্রমশ]
Pingback: বঙ্গবন্ধুর গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র: বাহাত্তরের সংবিধান ও সমতামুখী সমাজের আকাঙ্ক্ষা — Dr. Binayak Sen – C