বঙ্গবন্ধুর গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র: বাহাত্তরের সংবিধান ও সমতামুখী সমাজের আকাঙ্ক্ষা

পর্ব ::৬২
 পূর্বে প্রকাশিতের পর
দেখা যাচ্ছে উদারনৈতিক সমাজতন্ত্রী কাজী আবদুল ওদুদ আজ থেকে একশ’ বছর আগে সাধারণ জনমানুষের উত্থানকে ঠিকই চিনে নিতে পেরেছিলেন। আবার সেই উত্থানের সাথে জড়িত সামাজিক সম্ভাবনার পাশাপাশি ‘অসহিষ্ণুতা’ ও ‘অতিরিক্ততা’ প্রভৃতি সমস্যাকেও অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। বোঝাই যাচ্ছে, ওদুদ এখানে ‘বুর্জোয়া-গণতান্ত্রিক’ জাগরণের কথা বলছেন না। ওই প্রবন্ধেই ওদুদ লিখেছেন, ‘গণশক্তির জাগরণের ফলে অনেক কালের বুভুক্ষু দীন-পতিতের দলের একটা বিপুল ভোজের আয়োজন হইয়াছে। ভারতের জনগণও সেই উৎসবকে অবহেলা করিতে পারিবে না। … ভারতে কেন সমস্ত দুনিয়ার মধ্যাহ্ন দিনের মত গণশক্তির সুপ্রকাশ ও সেই গণশক্তির মূর্ত স্বরূপ গণতন্ত্রের অবাধ কর্ম চেষ্টাই চিরাচরিত নিয়ম হইয়া দাঁড়াইবে।’
তার চয়নকৃত ‘গণশক্তির’ ধারণাটি প্রকারান্তরে পরবর্তী কালের বঙ্গবন্ধুর ‘শোষিতের গণতন্ত্রের’ দিকেই নির্দেশ করছে। বঙ্গবন্ধুর মতোই ওদুদের চিন্তাতেও গণতন্ত্রকে গণশক্তির জাগরণের সমার্থক ধারণা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে :
‘ … গণশক্তি ও গণতন্ত্রের ভেতর দিয়া বিশ্বমানব সম্বন্ধে যে একটা সত্যের পরিচয় পাওয়া গিয়াছে, তাহা মানুষের সাধারণ বিত্তস্বরূপ অতঃপর সকল দেশের মানুষের পক্ষেই সুসঙ্গত হইবে; তবু … এই গণতন্ত্রের সত্যটি উপলব্ধি করিবার জন্যও তাহাদিগকে স্ব স্ব চিরন্তন ধারা অবলম্বন করিয়া অগ্রসর হইতে হইবে। … আমরা বুঝিয়া দেখিয়াছি যে, গণতন্ত্রের গোড়ার কথা হইতেছে আপামর সাধারণের উন্নত মানুষের সুখ-সুবিধার ভাগী হইবার আকাঙ্ক্ষা ও সেই আকাঙ্ক্ষার পরিতৃপ্তির জন্য রাজশক্তির পরিচালনা। … এক কথায় যে গণতন্ত্র চিরকালের মানুষের প্রাণের কামনা দিয়া গড়া, শুধু আধুনিক ইউরোপে উহা কতকটা মূর্ত হইয়া উঠিয়া আপন সৌন্দর্য ঐশ্বর্য ঘোষণা করিতেছে, ভারতের জনগণকেও সেই গণতন্ত্রের সামাজিক সাম্য-মৈত্রী-স্বাধীনতার অমৃত ফল ভোগ করিয়া ইহকালের জীবনের এক অভিনব স্বাদ গ্রহণ করিতে হইবে।’
এখানে ওদুদ ফরাসি বিপ্লবের ‘সামাজিক সাম্য-মৈত্রী-স্বাধীনতার’ প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। পরবর্তী অধ্যায়ে আমরা দেখব যে বঙ্গবন্ধুর বাহাত্তরের সংবিধান রচনার সময় যুগপৎ ফরাসি বিপ্লব ও অক্টোবর বিপ্লব গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছিল। এই সংবিধানে লিবারেল ডেমোক্রেসি ও সমাজতন্ত্র তথা সমতামুখিন সমাজের আকাঙ্ক্ষার যুগপৎ প্রতিফলন ঘটেছিল। এই সংবিধানের ভেতরে গণতন্ত্রের সামাজিক সাম্য-মৈত্রী-স্বাধীনতার পাশাপাশি মৌলিক অর্থনৈতিক অধিকারের প্রথম প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। এক্ষণে আমরা আমাদের বয়ানের মূল আখ্যানভাগে প্রবেশ করছি।
৬. বাহাত্তরের সংবিধানের ‘সমাজতন্ত্র’:প্রাসঙ্গিক দলিলপত্র
১৯৪৯ সালে বিখ্যাত বামপন্থি সাময়িকী ‘মান্থলি লেবার রিভিউ’ প্রথম প্রকাশিত হয়। এর প্রথম খণ্ডের প্রথম সংখ্যার লেখাটি লিখেছিলেন কোনো প্রথাগত সমাজতন্ত্রী নন- স্বয়ং আলবার্ট আইনস্টাইন। রবীন্দ্রনাথ বেঁচে থাকলে, আমার ধারণা, এর দ্বিতীয় লেখাটি লিখতেন। আইনস্টাইনের লেখাটির শিরোনাম ছিল- ‘হোয়াই সোশ্যালিজম?’ কেন সমাজতন্ত্র চাই। তার কারণগুলো আইনস্টাইন সহজ ভাষায় ব্যক্ত করেছেন। আজকের দিনে হলে অবশ্য বিতর্ক ঘনীভূত হতো সমাজতন্ত্র কী- হোয়াট ইজ সোশ্যালিজম- এই প্রশ্নকে ঘিরেই। অমর্ত্য সেন, এলান বাদিউ, জন রোমার, প্রণব বর্ধন, বা আমাদের দেশে আজিজুর রহমান খান, নজরুল ইসলাম সমাজতন্ত্র কী বা কী নয়, এ নিয়ে হয়তো বিতর্কে প্রবেশ করতেন। কিন্তু এসব বিতর্কের ঊর্ধ্বে হচ্ছে মানুষের এক সরল সাধারণ নিত্যকালের তাগিদ- ‘শোষণমুক্ত সমাজের’ স্বপ্ন দেখা। সমাজতন্ত্র শব্দটি সেই সমতামুখী সমাজের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে। সমাজতন্ত্রের ধারণা, কর্মসূচি, অর্থনৈতিক কলাকৌশল, রাজনৈতিক প্রেরণা যুগে যুগে বদল হয়েছে এবং হচ্ছে। কিন্তু মানুষ তার আকাঙ্ক্ষার মতো বড় এবং এই অর্থে সমাজতন্ত্রের চেয়ে সমতার আকাঙ্ক্ষা প্রাচীনতর মৌলিক তাগিদ। এর জন্য দীর্ঘকালের বন্ধুর পথ পাড়ি দেওয়া কোনো বড় কিছু ব্যাপার নয় মানবজাতির জন্যে। বারবার একথাই বলা হয়েছিল বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর মুখ থেকে। তিনি ও তার সহকর্মীরা যখন সংবিধানের ওপরে বিতর্ক করেছেন, বারবার তারা শোষণমুক্ত সমাজের স্বপ্ন ও সমাজতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষার কথা ব্যক্ত ও পুনর্ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু শুধু কথার সমষ্টি নয়, স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষাগুলো পরিশীলিত হয়ে শুধু অভিপ্রায়ে সীমিত না থেকে সংবিধানের বিভিন্ন ধারা-উপধারায় সংযোজিত হয়েছে। দেশের আইনকানুন, আর্থিক নীতিমালা, সামাজিক-রাজনৈতিক উদ্যোগ সবকিছু বিচার করার আইনি মানদণ্ড দাঁড় করায় সে দেশের সংবিধান। কোনটা মূল আদর্শ ((Fundamental Principles),), কোনটা মূলনীতি (Fundamental Policy), কোনটা ধারার মধ্যে, কোনটি উপধারা হিসেবে সংযোজিত হবে তা নিয়ে প্রচুর চিন্তাভাবনা, তর্কবিতর্কের সাক্ষ্য পাওয়া যায়। আমি নিচে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধারা-উপধারা ও এ-সম্পর্কিত তর্কবিতর্ক সম্পর্কে পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।
এটুকু লিখেই আমাকে থামতে হলো। সংবিধানের সমাজতান্ত্রিক ঐতিহ্যের আলোচনায় প্রবেশের আগে একটি জরুরি বিষয় মীমাংসা করা দরকার। বঙ্গবন্ধুর সমতামুখী আকাঙ্ক্ষার গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রকে বুঝতে চেয়ে আমি ফিরে তাকিয়েছি পূর্বসূরি বাঙালি চিন্তকদের সাম্যচিন্তার প্রতি। প্রথাগতভাবে কমিউনিস্ট বা সমাজতন্ত্রী না হয়েও বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, প্রমথ চৌধুরী, কাজী আবদুল ওদুদ প্রমুখের চিন্তায় সাম্যের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ পেয়েছিল এটা দেখানোর পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল এটা সপ্রমাণিত করা যে, বাংলায় পূর্বাপর গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রের এক দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ছিল। যাদের কথা উলেল্গখ করেছি, তারা ছাড়াও আরও অনেকে এখানে আলোচনার দাবী রাখেন। মুজিব এই ঐতিহ্যের আলো-হাওয়াতেই বেড়ে উঠেছিলেন। বাহাত্তরের সংবিধানের ‘সমাজতন্ত্র’ স্তম্ভটির সংযোজন ছিল সেই ঐতিহ্যগত সমাজতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষারই যৌক্তিক পরিণতি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ও বাহাত্তরের সংবিধানের সমাজতন্ত্র সম্পর্কিত ধারণার আরও একটি ‘নিকট-উৎস’ ছিল। আওয়ামী লীগের মতাদর্শ ও রাজনীতির বিবর্তনের ধারাতেই সেটি খুঁজে পাওয়া যায়। বাহাত্তরের সংবিধানের সমাজতন্ত্রকে অধ্যাপক নুরল ইসলাম (একজন শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ ও এ দেশের প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান) তার এক লেখায় বলেছিলেন-‘Evolutionary Socialism’। কথাটা দ্ব্যর্থবোধক। এক অর্থে এটি   ‘Revolutionary Socialism’-এর বিপরীতে বঙ্গবন্ধুর গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রকে অবিপ্লবী ‘বিবর্তনমূলক’ মতবাদ হিসেবে শনাক্ত করার চেষ্টা। অন্য অর্থে, এটি সমাজতন্ত্রের গোটা ধারণাকেই ‘evolution’ বা বিবর্তনের ধারায় দেখার দিকে তাগিদ দেয়- তা তার রূপ কখনও ‘বিপ্লবী’ কখনও ‘অবিপ্লবী’ যে চেহারাই নিক না কেন। বাহাত্তরের সংবিধানের অন্যতম মূল স্তম্ভ হিসেবে সমাজতন্ত্র সাংবিধানিক স্বীকৃতি পেয়েছিল। এটা কোনো বিস্ময়কর বা কাকতালীয় ব্যাপার ছিল না। আমি অবশ্য কোনো কোনো বিদ্বজ্জনকে বলতে শুনেছি যে বাহাত্তরের সমাজতন্ত্র আসলে হচ্ছে সত্তর দশকের গোড়াকার জাতীয়-আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও প্রভাবের (যুগের হাওয়ার) ফসল। এটি কোনো ভাবাদর্শগত অবস্থানের যৌক্তিক পরিণতি নয়। এ ক্ষেত্রে সে সময়ের নানা ঘটনাকে তারা চিহ্নিত করে থাকেন। যেমন, ১৯৭২-র আগেই ইন্দিরা কংগ্রেস নেহরু-যুগের সমাজতন্ত্রের তুলনায় আরও একটু ‘বাম দিকে’ ঝুঁকে পড়তে শুরু করেছিল। উদাহরণত ১৯৬৯ সালে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস বিদেশি ব্যাংক-বীমাসমূহ জাতীয়করণ করে নেয় এবং দেশের ভেতর মনোপলি পুঁজির ক্ষমতাও অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। ‘গরিবী হঠাও’ সে সময়কার জনপ্রিয় রাজনৈতিক স্লোগান হয়ে ওঠে। ইন্দিরার ঘনিষ্ঠ পরামর্শদাতাদের মধ্যে পিএন হাকসার ও ডিপি ধর বামঝোঁকের আমলা হিসেবে চিহ্নিত ছিলেন এবং এদেরকে সাধারণভাবে ‘মস্কোপন্থি’ হিসেবে ভাবা হতো। ১৯৭১ সালের আগস্ট মাসে ভারত সোভিয়েত মৈত্রী চুক্তি, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সোভিয়েতের সক্রিয় সমর্থন, ১৯৭১-এর ডিসেম্বর মাসে যখন বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমান্ডের সঙ্গে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর যুদ্ধ চলছে, তখন যুদ্ধবিরতি আনার পাক-মার্কিন অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সোভিয়েতের তিন-তিনবার ভেটো প্রদান ঢাকার পতনকে কূটনৈতিক-সামরিক দিক থেকে অনিবার্য করে তোলে। রুদ্ধশ্বাস ১৩-১৪-১৫ ডিসেম্বরের দিনগুলিতে মিত্রবাহিনী যখন ঢাকা অভিমুখে দ্রুতগতিতে অগ্র্রসর হচ্ছে, তখনও ইয়াহিয়া ও নিয়াজী আশা করছিলেন শেষ মুহূর্তের যুদ্ধবিরতির। কিন্তু সোভিয়েতের ভেটো তা হতে দেয়নি। এমনকি অপেক্ষাকৃত নিউট্রাল অবস্থানে থাকা ব্রিটেন ও ফ্রান্স ১৫ ডিসেম্বর- অর্থাৎ চূড়ান্ত বিজয়ের এক দিন আগে- একটি স্বতন্ত্র যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের খসড়া আনে, যা গৃহীত হলে বাংলাদেশের বিজয়-অর্জন অনেকাংশে বিঘ্নিত হতে পারত। ব্রিটেন-ফ্রান্সের আনা প্রস্তাব ‘Called for an immediate ceasefire and withdrawal of forces, and for ‘the urgent conclusion of a comprehensive political settlement in accordance with the wishes of the people concerned as declared through their elected and acknowledged representatives.’ এই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে সরকারের প্রতিক্রিয়া ছিল যে ইংল্যান্ড-ফ্রান্সের এই উদ্যোগ রাও ফরমান আলীর প্রস্তাবের চেয়েও নিকৃষ্ট (‘more retrograde than even Farman Ali proposal’) যেখানে অস্পষ্ট ভাষায় Political settlement-র কথা বলা হয়েছে :Even the ‘barest anatomy of the political settlement’ was unspecificd. ইন্দিরা গান্ধী সেই রাতেই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হীথ এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট পম্পিদুর কাছে জরুরি তারবার্তা পাঠিয়ে অনুরোধ করেন যাতে করে এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব জাতিসংঘে না তোলা হয়। ঢাকার পতন না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধের রুদ্ধশ্বাস দিনগুলোতে সোভিয়েতের দৃঢ় ভূমিকা বাংলাদেশের বিজয় অর্জনের ক্ষেত্রে এক ধরনের ‘গ্যারান্টি’ হিসেবে কাজ করেছিল। শ্রীনাথ রাঘবন তার গুরুত্বপূর্ণ বই ‘1971 : A Global History of the Creation of Bangladesh’ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক অনেক অজানা তথ্য পরিবেশন করেছেন। ‘নিরপেক্ষ’ ইতিহাসবিদের অবস্থান নিতে গিয়ে অনেক সময় তিনি মূলধারাকে উপধারায় পরিণত করার চেষ্টা করেছেন। তারপরও সেসব সন্নিবেশিত তথ্যের মাঝে ডিসেম্বরের যুদ্ধরত দিনগুলোতে সোভিয়েতের সুদৃঢ় ও প্রায় নির্ধারক ভূমিকা সবকিছু ছাপিয়ে ফুটে ওঠে। বঙ্গবন্ধু পরবর্তীতে এ নিয়ে স্পষ্ট করে বলেছিলেন ১৯৭২ সালের ১০ এপ্রিল গণপরিষদের এক ভাষণে : ‘আমি স্মরণ করি রাশিয়ার জনসাধারণ ও সরকারকে। যারা নিশ্চিতভাবে আমাদের সাহায্য করেছে। তারা প্রকাশ্যে আমাদের গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন এবং বাংলাদেশে ধ্বংসলীলা করার বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদ করেছেন। … এমনকি জাতিসংঘে রাশিয়া তিনটি ভেটো দিয়েছিল, তা না হলে সেখানে যে ষড়যন্ত্র চলছিল, তাতে বাংলাদেশের অবস্থা কী হতো তা বলতে পারি না।’ এর কিছুদিন আগে ৯ এপ্রিল ১৯৭২ ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু একইভাবে সোভিয়েতের উদ্যোগী ভূমিকার কথা স্মরণ করেন :
‘সোভিয়েতের জনসাধারণ ও সরকার শুধু যে আমাদের সাহায্য করেছিলেন তাই নয়। যখন সংগ্রাম করতেছিল বাংলাদেশের জনগণ, যখন আমাকে এখান থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয় মেশিনগান দিয়ে, তখন প্রথম দেশ, প্রথম দেশের প্রথম নেতা হিসেবে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ করে ইয়াহিয়া খানের কাছে অনেক চিঠি পাঠান এবং মানুষ খুন বন্ধ করার আবেদনও করেন।’

[ক্রমশ]

Leave a comment