পর্ব ::৯৮
[পূর্বে প্রকাশিতের পর]
সংবিধান গ্রহণের শেষ কার্যদিবসে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা স্মরণীয়ভাবে বলেছিলেন (এই বক্তব্যের পরই বঙ্গবন্ধু তাঁর সমাপনী ভাষণ দিতে উঠে দাঁড়ান):
“মাননীয় স্পীকার, স্যার, আজকের এই শেষ দিনে আমি কিছু বক্তব্য রাখতে ইচ্ছা করে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আপনি অনুমতি দিলে আমি বলতে পারি। আজকে শেষ দিনে আমরা আমাদের মনের আকাঙ্ক্ষা, আমাদের মনের অভিব্যক্তি-প্রকাশের শেষ পর্যায়ে এসেছি। আজকের এই শেষ দিনে আমাদের যে ঐতিহাসিক দায়িত্ব, বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি নর-নারীর যে মনের কথা, যে মনের অভিব্যক্তি, খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার কথা এই মহান গণপরিষদে এক পবিত্র দলিলে আমরা তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি- যে দলিলে থাকে মানুষের চলার পথের ইঙ্গিত। মানব-মনের আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলনের বাস্তকব রূপ আজকে এই মহান্ গণপরিষদে আমরা দিতে যাচ্ছি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে, এই গণপরিষদের একজন নির্দলীয় সদস্য হিসাবে আমি যে আলোচনা করেছি এই সংবিধানের উপর, সেখানে আমার মনের যে অভিব্যক্তি, মনের যে আবেগ, মনের যে ধারণা, সেটাই আমি সরল মনে ব্যক্ত করেছি আমার বক্তব্যে- একজন সম্পূর্ণ সরল মনের মতো। সেখানে ছিল না কোন উদ্দেশ্যমূলক কথা, সেখানে ছিল দেশকে আমি যেভাবে ভালবেসেছি, যেভাবে আমার মনের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেছি, যেভাবে আমি কোটি মানুষের একজন হয়ে দেখেছি, সেইভাবেই এই মহান্ গণপরিষদে বলেছি। মাননীয় স্পীকার, স্যার, আমি নির্দলীয় সদস্য হিসাবে আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেছি এবং আমাকে মাননীয় সদস্য-সদস্যা ভাই-বোন, মাননীয় স্পীকার এবং ডেপুটি স্পীকার যে সময় দিয়েছিলেন কথা বলার, সেটা আমি মনে করি, এই মহান গণপরিষদে গণতান্ত্রিক অধিকারের একটা ঐতিহাসিক স্বাক্ষর হয়ে থাকবে। মাননীয় স্পীকার সাহেব, আজ যে সংবিধান এই মহান্ গণপরিষদে গৃহীত হবার শেষ পর্যায়ে রয়েছে, সেই সংবিধানে বলা হয়েছে যে, গণতন্ত্রের মাধ্যমে সমাজতন্ত্র উত্তরণ হবে আমাদের জন্মভূমি বাংলাদেশে। মাননীয় স্পিকার সাহেব, আমাদের দেশে সমাজতন্ত্র হবে, দেশে অভাব থাকবে না, হাহাকার থাকবে না, মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ থাকবে না, হিংসা, দ্বেষ, বিদ্বেষ- কিছুই থাকবে না। শুধু থাকবে মানুষে মানুষে প্রেম, প্রীতি, মায়া, মমতা এবং তার দ্বারা এক নতুন সমাজ গড়ে উঠবে। মানবতার একটা ইতিহাস থাকবে এবং তাতে লেখা থাকবে “সবার উপর মানুষ সত্য, তাহার উপর নাই”। আমি আজ কামনা করি, তাই হোক। আসুন, শপথ করি, যেন আমাদের চেষ্টা সফল হয়, যেন শোষণহীন সমাজ বাস্তবে রূপায়িত হয়। আর যেন রাস্তায় রাস্তায় শ্নোগান না হয়, “আমাদের দাবী মানতে হবে”। আর যেন মিছিল না হয়, “আমাদের দাবী মানতে হবে”, “সংগ্রামে চলবে, সংগ্রাম চলবেই” বলে। সেই অবস্থা আর যেন না হয়। আমরা যেন আমাদের জন্মভূমি গড়ার কাজে ভাল করে মনোনিবেশ করতে পারি। আজ এই সংবিধান যাদের রক্তে এল, তাদের কথা যেন ভুলে না যাই। অতীতের ভুলের ইতিহাস, অতীত ইতিহাসের অভিজ্ঞতা, অতীতের মানব-সভ্যতা, মানুষের ত্যাগ-তিতিক্ষার যে সংগ্রামে, আজ এই সংবিধানে তা সন্নিবেশ করে আমাদের ইতিহাস বিশ্বের কাছে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই, যাতে আমাদের এই ইতিহাস বিশ্বের মধ্যে অনন্য হয়ে থাকতে পারে। আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাচ্ছি তাঁদেরকে, যাঁরা নিজেদের জীবন বলি দিয়েছিলেন, জেল খেটেছিলেন এবং এ দেশ থেকে স্বৈরাচারী পাকিস্তান সরকারকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন। যে সব ভাই-বোন সেই সরকারের কঠোর নির্যাতন সহ্য করেছিল, সে সব ভাই-বোনকে আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। স্বাধীনতার জন্য যে সব মা-বোন রক্ত দিল, যার জন্য আজ আমরা এই গণপরিষদে দাঁড়াতে পেরেছি, সেই মা-বোনদেরকে আমার শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।
আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা নিবেদন করছি সেই সব বীর মুক্তি-পাগল লোকদের, যাঁরা আজ পঙ্গু হয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে, যার জন্য তাঁরা অসীম দুঃখ-কষ্টে কালাতিপাত করেছেন। শ্রদ্ধা নিবেদন করছি ছাত্র-সমাজকে, শ্রদ্ধা নিবেদন করছি বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দকে, শ্রদ্ধা নিবেদন করছি বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি নর-নারীকে। সর্বশেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করছি জাতির শ্রদ্ধেয় পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যাঁর নেতৃত্বে আজ এই মহান্ গণপরিষদে কোটি কোটি মানুষের জন্য এই পবিত্র দলিল রচিত হয়েছে।”
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জাগে, এসব কথা যিনি সংবিধান গ্রহণের শেষ কার্যদিবসে বলবেন, তাকে কেন শেখ মুজিব ‘বাঙালি’ হয়ে যেতে বলবেন। আর বললেই বা তিনি শুনবেন কেন, বা কেনই বা চূড়ান্ত সংবিধানে স্বাক্ষর করবেন? মনে রাখতে হবে, বঙ্গবন্ধুর অনুরোধে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা বাকশালেও যোগ দিয়েছিলেন ১৯৭৫ সালে এবং ‘দ্বিতীয় বিপ্লবকে’ সমর্থন করেছিলেন।
দ্বিতীয়ত, সংবিধানের ১৪নং অনুচ্ছেদে স্পষ্ট করে লেখা ছিল ‘জনগণের অনগ্রসর অংশসমূহকে সকল প্রকার শোষণ হইতে মুক্তি দান’ করার লক্ষ্য। এতে করে পার্বত্যবাসী ও সমতলবাসী সকল উপজাতি-সম্প্রদায়কেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা এক্ষেত্রে ১৪ক ধারা হিসেবে সংশোধনী যেটি এনেছিলেন তাতে সংযোজন করতে চেয়েছিলেন নিল্ফেম্নাক্ত অংশ:
‘সংখ্যালঘু জাতিসমূহ ও অনগ্রসর জাতিসমূহের (ক) ন্যায়সঙ্গত অধিকার সংরক্ষণ করা হইবে; (খ) শিক্ষা, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক মান উন্নয়নের জন্য বিশেষ-অধিকার দেওয়া হইবে; এবং (গ) অগ্রসর জাতিসমূহের সহিত সমান পর্যায়ে উন্নীত হইবার পরিপূর্ণ সুযোগ রাষ্ট্র সম্পূর্ণভাবে নিশ্চয়তা বিধান করিবেন।’
কিন্তু এই সংশোধনী আনার কোনো প্রয়োজন ছিল না, কেবল ‘মনস্তাত্ত্বিক কারণ’ ছাড়া। অন্যান্য ধারায় এসব অধিকারকে বাংলাদেশের সকল অধিবাসীর জন্য নিশ্চিত করা হয়েছে। যেমন, ১৯নং অনুচ্ছেদে স্পষ্ট করে অঞ্চলগত সমতা বিধানের কথা নিশ্চিত করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে- ‘প্রজাতন্ত্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নের সমান স্তর অর্জনের উদ্দেশ্যে সুষম সুযোগ-সুবিধাদান নিশ্চিত করিবার জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।’ ২৮ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে (১) ‘কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারীপুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না,’ এবং (২) ‘কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে জনসাধারণের কোন বিনোদন বা বিশ্রামের স্থানে প্রবেশের কিংবা কোন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ভর্তির বিষয়ে কোন নাগরিককে কোনরূপ অক্ষমতা, বাধ্যবাধকতা, বাধা বা শর্তের অধীন করা যাইবে না’। এবং অবশ্যই মনে করতে হবে সবচেয়ে যেটা গুরুত্বপূর্ণ উপধারা যেখানে স্পষ্ট করা বলা ছিল যে ‘নারী বা শিশুদের অনুকূলে কিংবা নাগরিকদের যে কোন অনগ্রসর অংশের অগ্রগতির জন্য বিশেষ বিধান-প্রণয়ন হইতে এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করিবে না।’ অর্থাৎ লারমা যেটা চেয়েছিলেন সেটা অন্যভাবে অন্যান্য ধারার মধ্য দিয়ে পার্বত্যবাসীর জন্য নিশ্চিত করা হয়েছিল। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অনগ্রসর জাতি-গোষ্ঠীর যাতে অংশগ্রহণ থাকে সেজন্য ২৯নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল:
‘কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারীপুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ-লাভের অযোগ্য হইবেন না কিংবা সেই ক্ষেত্রে তাঁহার প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করা যাইবে না।
এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই (ক) নাগরিকদের যে কোন অনগ্রসর অংশ যাহাতে প্রজাতন্ত্রের কর্মে উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব লাভ করিতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যে তাঁহাদের অনুকূলে বিশেষ বিধান-প্রণয়ন করা হইতে,
(খ) কোন ধর্মীয় বা উপ-সম্প্রদায়গত প্রতিষ্ঠানে উক্ত ধর্মাবলম্বী বা উপ-সম্প্রদায়ভুক্ত ব্যক্তিদের জন্য নিয়োগ সংরক্ষণের বিধান-সংবলিত যে কোন আইন কার্যকর করা হইতে,
(গ) যে শ্রেণীর কর্মের বিশেষ প্রকৃতির জন্য তাহা নারী বা পুরুষের পক্ষে অনুপযোগী বিবেচিত হয়, সেইরূপ যে কোন শ্রেণীর নিয়োগ বা পদ যথাক্রমে পুরুষ বা নারীর জন্য সংরক্ষণ করা হইতে রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করিবে না।’
মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার আগে উল্লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ড. কামাল হোসেন একটি দীর্ঘ বক্তব্য দিয়েছিলেন। পূর্বতন ১৯৫৬ বা ১৯৬২-এর সংবিধানে পার্বত্যবাসীর বিশেষ ব্যবস্থার মধ্যে এনে সার্বিক নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। এটি তিনি সবিস্তারে ব্যাখ্যা করেছিলেন। পুরো উদ্ধৃতিটি প্রাসংগিক বিধায় তুলে ধরা হলো:
‘জনাব স্পীকার সাহেব, পাবর্ত্য চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত মাননীয় সদস্য সেই এলাকা সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন যে, বৃটিশ ও পাকিস্তানী ঔপনিবেশিক শাসনের সময় সে এলাকার যে একটা ইতিহাস ছিল, সংবিধানে তা উল্লেখ করা হয়নি। আগে সে এলাকার ব্যাপারে যে বিশেষ বিধান ছিল, এ সংবিধানে তা নেই। আমি এ কথা স্বীকার করছি, কিন্তু সেই সঙ্গে আমি এ কথাও বলতে চাই যে, আগে সে এলাকার লোকদের তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক করে রাখা হয়েছিল। এ সম্বন্ধে আমরা দেখতে পারি ভারত শাসন আইনের ৯২ ধারা। সে ইতিহাস আমরা সংবিধানে লিখিনি। ৯২ ধারায় এগুলোকে ‘এক্সক্লুডেড এরিয়া’ বলা হত। তাতে বলা আছে:
“The executive authority of a Province extends to excluded and partially excluded areas therein, but, not withstanding anything in this Act, no Act of the Federal Legislature or of the Provincial Legislature, shall apply to an excluded area or a partially excluded area…”
আইনের কোন ‘প্রটেকশন’ তাঁদের ছিল না। কোন আইন তাঁদের সম্পর্কে করা যেত না। আরও আছে:
“Governor may make regulation for the peace and good government of any area in a Province which is for the time being an excluded area, or a partially excluded area,…”
তখন তাঁরা সংসদের আওতা থেকে সম্পূর্ণ বাইরে ছিলেন। তাঁরা আইনের আশ্রয়ের বাইরে ছিলেন। ১৯৫৬ সালের পাকিস্তানে সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের (৪) দফায় এবং ১৯৬২ সালের সংবিধানের ২২১ অনুচ্ছেদে এটা দেখতে পাই। তাঁদের আইনের আশ্রয় থেকে বঞ্চিত করে সেখানে গভর্নরের শাসন চালু রাখার বিধান করা হয়েছিল। সংসদ তাঁদের ব্যাপারে কোন আইন প্রণয়ন করতে পারতেন না। তাঁরা আদালতের আশ্রয় থেকে বঞ্চিত থাকতেন। হাইকোর্টে মামলা করতে পারতেন না। ফাঁসির অর্ডার হলেও হাইকোর্টে যেতে পারতেন না। সচেতনভাবেই আমরা সেই ইতিহাসকে পেছনে ফেলে দিতে চাই। কারণ, এই সব বিধানের সাহায্যে তাঁদের নানাভাবে শোষণ করা সম্ভব হয়েছিল। দুঃখজনক যে, তাঁরা শোষিত হয়েছেন, তাঁদের শোষণ করা হয়েছে। মাননীয় সদস্য সেই শোষণের কথা বলেছেন। বিশেষ বিধান থাকার ফলেই শোষণ করা সম্ভব হত। ঔপনিবেশিক শাসকরা অন্যায়ভাবে নাগরিকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করত, এক অংশের বিরুদ্ধে অন্য অংশকে লেলিয়ে দিয়ে নিজেদের সুবিধা আদায় করত। দেশের অন্যান্য নাগরিকের সমান অধিকার তাঁদের দেওয়া হয়নি। আমাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক এবং তাঁদের তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক করে রেখেছিল এবং আমাদের শাসন ও শোষণ করত। বিশেষ বিধান থাকার ফলেই আমাদের শোষণ করা সম্ভব হত। আজ বাংলাদেশের সব অঞ্চলের জনসাধারণ রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছেন। আমরা সবাই আজ এক স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক। সংবিধানের ২৮ নম্বর অনুচ্ছেদে সকল নাগরিককে সমান মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের নাগরিক পার্বত্য চট্টগ্রাম, কুষ্টিয়া, দিনাজপুর বা পটুয়াখালী- এই সব এলাকার যেখানেই থাকুন না কেন, সবাই সমান মর্যাদা ভোগ করবেন। তার পরেও দেশের অনগ্রসর লোকদের জন্য বিশেষ বিধান রাখা হয়েছে। আমি আপনার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের মাননীয় সদস্যের কাছে আবেদন করব, তিনি যেন অতীতের ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণের কথা চিরদিনের জন্য ভুলে যান। বাংলাদেশের সবাই যাতে স্বাধীনতার ফল ভোগ করতে পারে, সেজন্য সকলে মিলে কাজ করার সময় এসেছে।’
তারপরও মানবেন্দ্র লারমার ওয়াকআউট ঠেকানো যায়নি। অনেকটা যেন অভিমান করেই তিনি সংসদ-কক্ষ থেকে বেরিয়ে গেলেন। পরে আবার আসলেন বটে, কিন্তু দাগ, একটা দাগ, তার মনের মধ্যে থেকে গিয়েছিল।
[ক্রমশ]