পর্ব ::৯১
[পূর্বে প্রকাশিতের পর]
১৯৫৭ সালের ১৩ জানুয়ারির প্রচারপত্রে ভাসানী নিল্ফেম্নাক্ত আহ্বান জানান : ‘দেশের নানাবিধ সমস্যার সমাধানের উপায় উদ্ভাবন এবং আন্দোলনকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য আমি আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি হইতে সপ্তাহব্যাপী সন্তোষ কাগমারীতে এক বিরাট সম্মেলন আহ্বান করিয়াছি। দল, মত, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে উক্ত সম্মেলনে যোগদান করিয়া জনগণের দাবি আদায়ের আন্দোলন জোরদার করুন।’ ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি ‘কাগমারীর ডাক’ শীর্ষক আর একটি প্রচারপত্র প্রকাশ করেন। তাতে বলা হয় : ‘* সাড়ে চার কোটি বাঙালির বাঁচার দাবি আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন আদায়ের ডাক। * ঐতিহাসিক মহান ২১ দফা আদায়ের ডাক। * চাষি, মজুর, কামার, কুমার, ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী, শিল্পী, সকল শ্রেণির মিলনের ডাক। * পূর্ব বাংলার ৬০ হাজার গ্রামে আওয়ামী লীগকে সংগঠনের ডাক। * ২১ দফার পূর্ণ রূপায়ণের জন্য আমাদের নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলন চালাইয়া যাইতে হইবে। ইহা সারা পাকিস্তানের সামাজিক ও আর্থিক পরাধীনতার হাত হইতে মুক্তির মহান সনদ, ইহা যেন আমরা কখনো বিস্মৃত না হই।’
সম্মেলনের প্রাক্কালে ৫ ফেব্রুয়ারি তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন : ‘আমি কোনো প্রকার যুদ্ধজোটে বিশ্বাস করি না। বিশ্বশান্তির পরিপন্থি যে কোনো প্রকার যুদ্ধজোট মানব সভ্যতা ও মুক্তির পথে বাধাস্বরূপ। …যত কঠিন বাধাই আসুক না কেন, আমি পাকিস্তানের জনগণের প্রকৃত কল্যাণের জন্য স্বাধীন ও জোটনিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতির সংগ্রাম করিয়া যাইব। কারণ, আমি বিশ্বাস করি, এই নীতি পাকিস্তানের জনগণের প্রকৃত মুক্তি ও শান্তির পথ প্রশস্ত করিবে।’
৭ ফেব্রুয়ারি সকালে কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয় সন্তোষের জমিদারদের একটি ভবনে। অধিবেশনে ৮৯৬ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। অধিবেশনে ভাসানী একটি ঐতিহাসিক ভাষণ দেন, যাতে তিনি বলেন : ‘জনসাধারণের অগাধ বিশ্বাস ছিল তখন মুসলিম লীগের উপর।…কিন্তু মাত্র ৯টি বছর না যেতেই আজ মুসলিম লীগ জনসাধারণের মন থেকে ধুয়েমুছে গেল। এত বড় একটা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের এরূপ অবস্থা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।’ ঐ ভাষণেই আওয়ামী লীগের পক্ষে ‘সাবধান হওয়া সহজ হবে’ বলে তিনি মুসলিম লীগের ভুল ও পতনের কারণগুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “প্রথমত, ক্ষমতা তাদের মাথা গুলিয়ে দিয়েছিল। দ্বিতীয়ত, তারা ব্যক্তিগত ও দলগত স্বার্থ রক্ষার জন্য রাজনীতিতে ধর্মকে টেনে আনলেন। তৃতীয়ত, মুসলিম লীগ নেতাদের অধিকাংশই ‘রাজনৈতিক সভা-সমিতিকে প্রধানত ধর্মমূলক ওয়াজ-নসিহতের জলসা’য় পরিণত করলেন। চতুর্থত, মুসলমানের আল্লাহ এক, ধর্ম এক, রসুল এক এবং কেতাব এক- এই যুক্তিতে রাজনৈতিক দলও হবে এক বলে প্রচার চালালেন তারা। একই যুক্তিতে তারা বলে যেতে লাগলেন, বিরোধী দল মাত্রই রাষ্ট্রদ্রোহী। পঞ্চমত, মুসলিম লীগের কর্ণধারগণ পাকিস্তান তাদের ব্যক্তিগত জমিদারি মনে করে নিজেদের ব্যাংক ব্যালান্স এবং সম্পত্তি ইত্যাদির জন্য রাষ্ট্রের ধন ও সম্পদ নির্লজ্জ লুণ্ঠনে মত্ত হলেন। তা অতীতের সমস্ত রাজনৈতিক অসততা, দুর্নীতি, ফেরেববাজি ও চুরিচামারিকে হার মানাবে।”
এর পর মওলানা তার নিজের দলের সরকার সম্পর্কে বলেন : ‘বিরোধী দলের অস্তিত্ব রাষ্ট্রের জন্য সরকারি দলের মতোই সমান প্রয়োজন বলে মনে করতে হবে।… মোটকথা, পূর্ণ পার্লামেন্টারি শাসন এবং সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হবে আমাদের লক্ষ্যস্থল। এখন পর্যন্ত আমাদের অনেক কাজ বাকি। একুশ দফা ওয়াদার মূল দফা এবং আওয়ামী লীগ মেনিফেস্টোরও প্রধান কথা হলো পররাষ্ট্র, মুদ্রা এবং দেশরক্ষা বিভাগ ছাড়া আর সব বিভাগের ভার প্রদেশকে দিতে হবে। কারণ, যতদিন না পূর্ব পাকিস্তান তার অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করার পূর্ণ ক্ষমতা পাচ্ছে; যতদিন না শিল্প ও বাণিজ্য, রেলওয়ে, পোস্ট অফিস প্রভৃতি বিভাগের পূর্ণ কর্তৃত্ব স্থানীয় সরকারের হাতে আসছে; যতদিন না পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক বিচারে দুটি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ইউনিট বলে স্বীকার করা হচ্ছে; ততদিন পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল সম্ভব নয়।’
কাগমারী সম্মেলনে মওলানা ভাসানীর ভূমিকা নিয়ে আবু জাফর শামসুদ্দীন তার স্মৃতিচারণায় লিখেছেন, অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি সম্মেলনের তোরণগুলোর নাম-নির্বাচনের মধ্যেও প্রতিফলিত হয়েছিল :
‘যতদূর মনে পড়ছে তার মধ্যে মহাত্মা গান্ধী, মওলানা মোহাম্মদ আলী, সুভাষচন্দ্র বসু, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, ব্যারিস্টার আবদুর রসুল প্রমুখের নাম বহনকারী তোরণও ছিল। ১৯১৯-২১ এবং ১৯৩০-৩২ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতাদের প্রতি মওলানা ভাসানী বিশেষ শ্রদ্ধার ভাব পোষণ করতেন। মওলানা সাহেব স্থাপিত কাগমারী কলেজের নাম মওলানা মোহাম্মদ আলী কলেজ। মোট কথা, কাগমারীর আয়োজন ছিল অভূর্তপূর্ব।’
আরেক নেতা নূরুল হক চৌধুরী তার স্মৃতিচারণে লিখেছেন :’আমি ডেলিগেট হিসেবে সম্মেলনে যোগদান করেছিলাম। টাঙ্গাইলে ঢুকেই দেখি হজরত মোহাম্মদ তোরণ, তারপর তোরণ আর তোরণ। গান্ধী তোরণ, মওলানা মোহাম্মদ আলী তোরণ, নজরুল তোরণ, ইকবাল তোরণ, নেতাজি সুভাষ বসু তোরণ, হাজি শরীয়ত তোরণ, তিতুমীর তোরণ, নেহরু তোরণ, হাজি মোহাম্মদ মুহসীন তোরণ, সিআর দাশ তোরণ, লেনিন তোরণ, স্ট্যালিন তোরণ, মাও সে তুং তোরণ, ওয়ার্ডসওয়ার্থ, বায়রন, শেলি, হালি, রুমি, ইমাম আবু হানিফা, গাজ্জালি তোরণ- টাঙ্গাইল থেকে সন্তোষ পর্যন্ত মোট ৫১টি তোরণ। সর্বশেষ তোরণ ছিল কায়েদ-ই আযম তোরণ।’
কাগমারী সম্মেলনের স্বাগত ভাষণে মওলানা ভাসানী বিশ্ব শান্তি আন্দোলনের সাথে এই সম্মেলনের নিকট সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন। তার ভাষণে উঠে আসে বার্ট্রান্ড রাসেল, পাবলো নেরুদা, ম্যাক্সিম গোর্কির কথা। এখানে উল্লেখ্য এর তিন বছর আগে ১৯৫৪ সালে স্টকহোমের শান্তি সম্মেলনে ভাসানী বিশ্ব শান্তি পরিষদের পূর্ব পাকিস্তান শাখার সভাপতি হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। এই বিশ্ব শান্তি পরিষদই পরবর্তী সময়ে (১৯৭৩ সালে) বঙ্গবন্ধুকে ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদকে সম্মানিত করেছিল। স্টকহোমে ভাসানীর সফরসঙ্গী ছিলেন খোন্দকার মোহাম্মদ ইলিয়াস। ‘ভাসানী যখন ইউরোপে’ শীর্ষক বইয়ে ভাসানীর সফর সম্পর্কে একটি অনুপুঙ্খ বিবরণ পাওয়া যায়। সেখানে মওলানার সাথে তার হোটেলে এসে সাক্ষাৎ করেন বিশ্বের দুই বিখ্যাত কবিু তুরস্কের নির্বাসিত কবি নাজিম হিকমত ও চিলির নির্বাসিত কবি পাবলো নেরুদা। ইলিয়াসের ভাষ্যে মওলানা ভাসানী যখন ‘পরস্পরের নিকট হতে বিদায় নিচ্ছিলেন তখন তিন মনীষীর মুখেই ফুটে উঠেছিলো শান্তি ও সান্তনার প্রদীপ্ত আভা।’ স্টকহোমের ভাষণে ভাসানী বলেছিলেন: “বন্ধুগণ, আজ থেকে সাত বছর আগে এই স্টকহোম শহর থেকেই সর্বপ্রথম উত্থিত হয় শান্তির আওয়াজ। ‘স্টকহোম আবেদন’ নামে খ্যাত শান্তির আবেদনে স্বাক্ষর দান ও স্বাক্ষর সংগ্রহে সেদিন যারা উদ্যোগী হয়েছিলেন, আমি তাঁদের সকলকে শ্রদ্ধা জানাই। আমি শ্রদ্ধা জানাই সেই মহান বৈজ্ঞানিক আইনস্টাইনকে যিনি আমরণ সংগ্রাম করেছেন যুদ্ধের বিরুদ্ধে। আমি অভিনন্দন জানাই বিশ্ব-সাহিত্যিক জর্জ বার্নার্ড শ-কে যিনি ছিলেন বিশ্বশান্তি আন্দোলনের অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা। আমি শ্রদ্ধা জানাই বৈজ্ঞানিক জুলিও কুরিকে যাঁর জীবনের একমাত্র সাধনা মানবতাকে হানাহানি ও রক্তারক্তি থেকে মুক্তি দিয়ে পৃথিবীর বুকে শাশ্বত শান্তির নির্মল পরিবেশ সৃষ্টি করা। আমি শ্রদ্ধা জানাই সোভিয়েত ইউনিয়নের কালজয়ী ঔপন্যাসিক ইলিয়া ইরেনবুর্গকে যার অমর লেখনী আজ নিয়োজিত মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ববোধ ও চিরস্থায়ী মৈত্রী স্থাপনের কাজে।” একই কথা ভাসানী বললেন কাগমারী সম্মেলনে। স্টকহোম সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন: ‘সাল্ফ্রাজ্যবাদের ইতিহাস কপটতার ইতিহাস। সকল মানুষকে সকল কালের জন্য সে ইতিহাস প্রবঞ্চিত করতে পারে না বটে কিন্তু সাময়িকভাবে হলেও সাম্রাজ্যবাদ বিভিন্ন দেশে কতিপয় ভাড়াটে সমর্থক জোগাড় করতে সমর্থ হয়।…আজ সারা দুনিয়ার সাধারণ মানুষ সকল প্রকার সামরিক প্রস্তুতির বিরুদ্ধে, যুদ্ধের বিপক্ষে। …সে জনতার মিছিলে শরিক হয়েছেন আমেরিকার লব্ধপ্রতিষ্ঠ লেখক হেমিংওয়ে, হাওয়ার্ড ফাস্ট, সংগীতজ্ঞ পল রবসন, বিজ্ঞানী আইনস্টাইন আর রোজেনবার্গ দম্পতির মতো অসংখ্য পরিবার।’ কাগমারী সম্মেলনের ভাষণে ভাসানী এর সাথে যুক্ত করলেন সাম্প্রদায়িক সমস্যার কথা। সম্মেলনের প্রত্যক্ষদর্শী আবু জাফর শামসুদ্দিনের মতে ভাসানী এই সম্মেলনে উপমহাদেশের হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িক সমস্যার ওপরে দীর্ঘ বক্তব্য রাখেন:\হ’ভাসানী বলেন, সাম্প্রদায়িক সমস্যা আজ পাকিস্তান ও ভারতের জনগণের সবচেয়ে বড় দুশমন। এই সমস্যা নির্মূল করতে না পারলে এই দুই দেশের মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে না। তাদের সমস্ত উন্নয়নের উদ্যোগ বরবাদ হয়ে যাবে।…আধুনিক রাষ্ট্রে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ সমান অধিকার নিয়ে বাস করে থাকে। পাকিস্তান শুধু মুসলমানদের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি, যদিও এটি মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। কিন্তু তিনি জোর দিয়ে বলেন, এ দেশ হিন্দুর, বৌদ্ধদের, খ্রিষ্টানদের, আদিবাসী-উপজাতীয় সকলের।…তিনি বলেন, ভারত পাকিস্তান বৈরিতা দুই দেশকে চরম ক্ষতিগ্রস্ত করবে।…তিনি এদেশের সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে অবক্ষয়ের কারণগুলো খুঁজে বের করার কথাও বলেন।’
কাগমারী সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছিলেন ঔপন্যাসিক তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবোধকুমার সান্যাল, হুমায়ুন কবীর প্রমুখ। এই সম্মেলনে একদিন ভাসানীর সাথে তারাশঙ্করের কথা হয়। সৈয়দ আবুল মকসুদ জানিয়েছেন, মওলানা তারাশঙ্করকে বলেন, ‘যে সকল হিন্দু বাড়িঘর ফেলে এখান থেকে ভারতে চলে গিয়েছে তাদের আবার ফেরত আসা উচিত। আমরা তাদের পূর্ণ মর্যাদায় স্বদেশে বসবাসের ব্যবস্থা করব। ভারত থেকে যে সকল মুসলমান মোহাজের এখানে আসবে তারাও এক ভিন্ন সংস্কৃতিতে আরামে নেই। ব্যাপক হারে দেশ ত্যাগের বিরুদ্ধে দু’দেশের সরকারের উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।’
কাগমারী সম্মেলনে মওলানা ভাসানীর সাম্রাজ্যবাদবিরোধী, সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী ও বিশ্ব আঞ্চলিক শান্তির সপক্ষে প্রদত্ত জোরালো যুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে রক্ষণশীল মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। দৈনিক আজাদ তার সম্পাদকীয়তে লিখেছিল: ‘মওলানা ভাসানীর ভাষণে এমন কতকগুলি উক্তি আছে, যাতে সত্যভাবে পাকিস্তানীমাত্রই শঙ্কিত না হইয়া পারেন না। মোছলেম লীগের নিন্দায় মওলানা ভাসানী তাঁর ভাষণে একেবারে পঞ্চমুখ হইয়া উঠিয়াছেন: তা হোন, কিন্তু বেসামাল হইয়া তিনি এমন কথাও বলিয়া ফেলিয়াছেন: প্রাক-পাকিস্তান যুগেও মোছলেম লীগের কোনো অস্তিবাচক জীবনদর্শন ছিল না। প্রধানত বিদ্বেষকে অলম্বন করে সেদিন আমাদের রাজনীতি পরিচালিত হয়েছে। জিঘাংসার নিবৃত্তি হলে আমরা কী গড়ে তুলব সেদিন এ কথা আমাদের কোনো নেতা চিন্তা করেননি এবং চিন্তা করেননি বলেই পাকিস্তানে আজ পর্যন্ত সত্যকার গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা হলো না।’
১৯৫৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত দৈনিক আজাদের ঐ দীর্ঘ সম্পাদকীয়তে মওলানা ভাসানীর মূল প্রক্রিয়াকে এভাবে প্রকাশ করা হয়েছিল: “পাকিস্তান সম্পর্কে এই ধারণা পোষণ করেন বলিয়াই কি মওলানা ভাসানী ইহাকে আজ রসাতলে লইয়া যাইবার মতলব আঁটিয়াছেন? তাঁর এই মতলব ধরা পড়িয়াছে তাঁর আর একটি উক্তিতে। তিনি বলিয়াছেন যে, পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানের শোষণ যদি বন্ধ না হয় তবে অদূর ভবিষ্যতে এমন দিন আসিবে, যখন পূর্ব পাকিস্তান হয়তো পশ্চিম পাকিস্তানকে জানাইবে ‘আসসালামু আলাইকুম’ অর্থাৎ পাকিস্তান আলাদা হইয়া যাইবে।”
[ক্রমশ]