পর্ব :: ৮০
[পূর্বে প্রকাশিতের পর]
সমাজতন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য যদি দরকার হয়, গণভোটে যারা প্রতিনিধি হয়ে আসবেন, তারা আইন করে ব্যক্তি সম্পত্তি সম্পূর্ণভাবে বিলোপ করতে পারবেন। কেনো বাধা নাই। এ জন্য রক্তক্ষয়ের দরকার নাই। বিপ্লবের দরকার নাই।… বিভিন্ন দেশে সেই সব দেশের লোকদের নিজস্ব চিন্তাধারার মাধ্যমে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। চেকোস্লোভাকিয়া, যুগোস্লাভিয়া, জিডিআর, সোভিয়েত রাশিয়া, চীন প্রভৃতি দেশে বিভিন্ন পদ্ধতিতে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ৪৭ অনুচ্ছেদের কথা বলছিলাম। যে কোনো সম্পত্তি, যে কোনো পদার্থ-স্থাবর অস্থাবর যাই হোক না কেন, নেওয়া যাবে। এর চেয়ে বেশি কী করা যেতে পারে? যা চীন করেনি, রাশিয়া করেনি, কোনো সমাজতান্ত্রিক দেশ করেনি, আমরা তা করেছি। কাজেই জনাব স্পিকার সাহেব, সমাজতন্ত্রের পথে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে, এ কথা অত্যন্ত অমূলক। বিচার করলে সে কথা মেনে নিতে পারি না। আগেও আবেদন করেছি, আপনার মাধ্যমে আবার আবেদন করব যে, তারা [বামপন্থিরা] অযথা মানুষের মনে আশা জাগিয়ে তুলবেন না। যেটা দিতে পারবেন না, যেটা সম্ভব নয়, সেটা নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করবেন না। তাতে লাভ নাই।’
আছাদুজ্জামান খানের বক্তব্যে ৪২ নং অনুচ্ছেদের কথা এসেছিল ৪৭ নং অনুচ্ছেদের পাশাপাশি। ৪২নং অনুচ্ছেদের সঙ্গে ৪৭ নং অনুচ্ছেদের আংশিক বিরোধ আছে। ৪২ নং অনুচ্ছেদে যে অধিকার প্রদত্ত হয়েছে, ৪৭নং অনুচ্ছেদে সেই অধিকার নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এমনকি ৪২ নং অনুচ্ছেদের ১ নং দফায় যে অধিকার দেওয়া হয়েছে, এর ২ নং দফায় তাকে আবার যুক্তিসংগত বিধিনিষেধের মোড়কে বাঁধা হয়েছে। যেমন ৪২ (১) ধারায় নাগরিককে ‘সম্পত্তির অধিকার’ দেওয়া হয়েছে এভাবে :’আইনের দ্বারা আরোপিত বাধানিষেধ-সাপেক্ষে প্রত্যেক নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর ও অন্যভাবে বিলিব্যবস্থা করিবার অধিকার থাকিবে এবং আইনের কর্তৃত্ব ব্যতীত কোন সম্পত্তি বাধ্যতামূলকভাবে গ্রহণ, রাষ্ট্রায়ত্ত বা দখল করা যাইবে না।’ এর পরপরই বলা হয়েছে যে, ৪২ (১) দফার অধীনে প্রণীত আইনে দেশের স্বার্থে ‘ক্ষতিপূরণসহ বা বিনা ক্ষতিপূরণে বাধ্যতামূলকভাবে গ্রহণ, রাষ্ট্রায়ত্তকরণ বা দখলের বিধান করা হইবে।’ কিন্তু ‘অনুরূপ কোন আইনে ক্ষতিপূরণের বিধান করা হয় নাই বলিয়া কিংবা ক্ষতিপূরণের বিধান অপর্যাপ্ত হইয়াছে বলিয়া সেই আইন সম্পর্কে কোন আদালতে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।’
এই র্যাডিকেল সিদ্ধান্ত নেওয়াটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা, যদিও শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিপ্লবের কথা বলেছেন আছাদুজ্জামান খান, ৪২ (২) ধারায় ক্ষতিপূরণের বিষয়টি আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না এই বিধান রেখে ব্যক্তিমালিকানাধীন সম্পত্তির অধিগ্রহণের বিষয়টিকে অত্যন্ত র্যাডিকেল এক চেহারা দেওয়া হয়েছে। এরকম অধিগ্রহণ অক্টোবর বিপ্লবোত্তর রাশিয়া বা চীনে পুঁজিবাদী সম্পত্তির বিনা শর্তে রাষ্ট্রায়ত্তকরণ বা expropriation-র সঙ্গে তুলনীয়। এই আইনের পেছনে প্রচ্ছন্ন পলিটিক্যাল ইকনোমি কারণ ছিল। যেসব অবাঙালি মালিক ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বরের পর তাদের কল-কারখানা ফেলে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছিলেন, যাওয়ার আগে তারা তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সব টাকা তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। বিদেশে থেকে তারা পাঁয়তারা করছিলেন সময়-সুযোগ বুঝে দেশের আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার, যাতে করে তারা তাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন কল-কারখানাগুলো ফেরত পেতে পারেন, অথবা তারা পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন। সদ্য-স্বাধীন সরকারকে এই আশঙ্কা বিচলিত করেছিল। সেজন্যেই ৪২ (২) ধারার র্যাডিকেল অবতারণা এবং ৪৭ অনুচ্ছেদের সংযুক্তি বেশি করে প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল সেদিন।
আগেই বলেছি, ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষেত্রে অধিকার দেওয়া হয়েছে ৪২(১) অনুচ্ছেদে। কিন্তু সেখানে ‘যুক্তিসংগত বাধানিষেধ’ শর্তটি আরোপিত হয়েছিল। এই শব্দবন্ধের আরোপ করা নিয়েও তর্ক-বিতর্ক হয়েছিল সেদিনের গণপরিষদে। যারা আপত্তি তুলেছিলেন, তারা ভয় পাচ্ছিলেন যে এতে করে গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রের গণতন্ত্রের অংশটুকু ক্ষুণ্ণ হতে পারে। যেমন মো. আবদুল আজিজ চৌধুরী (সিলেট-২১) একটি সার্বিক মন্তব্য রাখেন এ প্রেক্ষিতে :
‘জনাব স্পিকার, এই সংবিধানের ৩১ নম্বর অনুচ্ছেদ হতে ৪৭ নম্বর অনুচ্ছেদ পর্যন্ত বিধানগুলোতে মানবিক মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি রয়েছে; কিন্তু সেই সঙ্গে যুক্তিসংগত বাধানিষেধ আরোপ-সংক্রান্ত শর্তাবলি সংযোজনের ফলে ভয় হয় যে, যে কোনো কথার বিরুদ্ধে, যে কোনো বক্তব্যের বিরুদ্ধে সরকার যে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবেন।’
এই সাধারণ আশঙ্কার প্রেক্ষিতে ড. কামাল হোসেন তার ৩০ শে অক্টোবর, ১৯৭২-এর ভাষণে যা বলেছিলেন তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং পূর্ণ উদ্ধৃতি দেওয়ার দাবি করে :
‘[বিভিন্ন] দেশের মৌলিক অধিকার সম্পর্কিত বিধান পর্যালোচনা করে যে সিদ্ধান্তে এসেছি, সেটা হল, কোন কোন দেশে দুইটা ‘অ্যাপ্রোচ’ লক্ষ্য করা যায়। একটা হল, আইন-সাপেক্ষ মৌলিক অধিকার-যেমন পূর্ব জার্মানি এবং অন্যান্য সমাজতান্ত্রিক দেশের সংবিধানে রয়েছে যে, এ ব্যাপারে সংসদের পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে। সেখানে আইনের দ্বারা সবকিছু নির্ধারিত হতে পারবে। কোনো কিছুর ওপর বাধা-নিষেধ আরোপ করা যাবে আইনের দ্বারা।
দ্বিতীয়টি হচ্ছে মানবাধিকারের ঘোষণা। যেসব দেশে এই ব্যবস্থা রয়েছে, সেসব দেশেও আইন-পরিষদের ক্ষমতা আছে আইন করার। কিন্তু কোন রকম যুক্তিসংগত বাধানিষেধ আরোপ করার এখতিয়ার একমাত্র আদালতের। কোন বাধানিষেধ যুক্তিসংগত হল কিনা, সেটা বিচার করবেন আদালত। এটার দ্বারা কিন্তু মৌলিক অধিকারের পূর্ণ রক্ষা হয়।’
এই দুটো ধারার মধ্যে ২য় ধারাটি বাংলাদেশ বেছে নিয়েছে, কেননা ২য় ধারার মধ্যেই গণতন্ত্রের সর্বোচ্চ রক্ষাকবচ নিহিত। ১ম ধারাটিতে সংসদের হাতে সীমাহীন ক্ষমতা দিয়ে দেওয়া হয়- যার ফলে ইচ্ছে করলে সংসদ অধিকার ও স্বাধীনতাকে সংকুচিত করতে পারে, যেটাকে আদালতেও চ্যালেঞ্জ করা যায় না। পক্ষান্তরে ২য় ধারাটিতে সংসদ ‘যুক্তিসংগত বাধানিষেধ আরোপ করে’ ঠিকই, কিন্তু সেটা ‘যুক্তিসংগত হল কি হল না, সেটা বিচার করার এখতিয়ার সুপ্রিম কোর্টের। এই অধিকার সুস্পষ্ট, সুনিশ্চিত। সংসদ এটা খর্ব করতে পারবেন না।’
বিষয়টি আরও স্পষ্ট করার জন্য ড. কামাল সেদিন সংবিধান শাস্ত্র থেকে ইংরেজিতে দীর্ঘ উদ্ধৃতি দিলেন। সেটি শুনে নেওয়া দরকার।
‘The power to impose limitations may be looked at from another angle, which presents two possibilities. The first is that the legislature is given general, unrestricted Power to limit rights and freedom : they are simply made subject to the laws. Such a formula depicts the right and freedoms of any higher safeguard, and renders them valueless.
The second possibility is that the legislature is empowered to limit the rights and freedoms only for certain clearly defined purposes : they are made subject to the laws in certain specified respects only. The universal declaration uses this formula; it permits limitations on rights and freedoms for the protection of four community interests. These interests are : (1) due recognition and respect for the rights and freedoms of others; (2) meeting the just requirements of (a) morality, (b) public order, and (c) the general welfare in a democratic society.’
এই দ্বিতীয় দৃষ্টিভঙ্গিটি অনুসরণ করলে- ড. কামালের মতে- ‘মৌলিক অধিকারের ক্ষেত্রে এর চেয়ে বেশি রক্ষাব্যবস্থা দেওয়া সম্ভব হয় না।’ আর বাংলাদেশ তথা বাহাত্তরের সংবিধান সেই দৃষ্টিভঙ্গিই অনুসরণ করেছে :সংসদ মৌলিক অধিকার দেওয়ার বেলায়-কোনো কোনো ক্ষেত্রে- ‘যুক্তিসংগত বাধানিষেধ আরোপ করার বিধান রেখেছে বটে, কিন্তু তা যুক্তিসংগত হল কি হল না, সেটা বিচার করার এখতিয়ার কেবল সুপ্রীম কোর্টের।’ সেই এখতিয়ারে হাত দেওয়ার কোনো ক্ষমতা নেই সংসদের। প্রায় প্রত্যেক অধিকারের ক্ষেত্রে এই বিধান করা হয়েছে (অবশ্য এ ক্ষেত্রে ড. কামালের একটি প্রধান অনুমান ছিল যে, সুপ্রীম কোর্ট হবে সংসদ ও সরকারী প্রশাসনের থেকে সম্পূর্ণ মাত্রায় হস্তক্ষেপমুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান)। প্রত্যেক অধিকারের ক্ষেত্রে করা হয়েছে কেবল মাত্র ৪৭নং অনুচ্ছেদ ছাড়া। এই ৪৭নং অনুচ্ছেদ প্রসঙ্গে ড. কামাল বললেন :
“একটি মাত্র যে ব্যতিক্রম করেছি, সেটি হলো সম্পত্তির অধিকার সম্পর্কে। ‘আইন-সাপেক্ষে’ এবং ‘যুক্তিসংগত’ কথাটা সেখানে নেই। অন্য সবগুলির ব্যাপারে আমরা ‘যুক্তিসংগত বাধানিষেধ’ রেখেছি। এটা করা হয়েছে গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রকে সামনে রেখে। যাতে একটা ফর্মুলা বের করা যায়, তার একটা রূপরেখা আমরা দিয়েছি এই সংবিধানে। প্রত্যেক মৌলিক অধিকারের ক্ষেত্রে যুক্তিসংগত বাধানিষেধ থাকল কি থাকল না, তা নিয়ে তর্ক করার কোনই অবকাশ নেই। কারণ, সেটা আদালত দেখবেন। তবে সম্পত্তির অধিকারের ব্যাপারে সংসদকে সার্বভৌম অধিকার দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনসভা যা নির্ধারণ করে দেবেন, সেটাই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। এ ব্যাপারে আদালতের কোন এখতিয়ার থাকবে না। জাতীয়করণের প্রয়োজনে সমাজতন্ত্রের প্রয়োজনে এটা করতে হয়েছে। অন্যান্য দেশের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে আমরা এই শিক্ষা গ্রহণ করেছি।”
কী সেই তিক্ত অভিজ্ঞতা যার জন্য ৪৭নং অনুচ্ছেদের মতো রক্ষাকবচ করতে হল? এ বিষয়ে প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় সৈয়দ নজরুল ইসলামের ১৯ অক্টোবরের ভাষণে। ১৯৬৯ সালে জাতীয়করণ করতে গিয়ে ভারতের তিক্ত অভিজ্ঞতার উল্লেখ করে তিনি বলেছিলেন : ‘যেদিন ইন্দিরা গান্ধীর সরকার ব্যাংক, ইনসিওরেন্স জাতীয়করণ করার জন্য আইন পাস করেছিল, সেদিন ভারতের সুপ্রীম কোর্টের চিফ জাস্টিস জনাব হেদায়েতুল্লাহ তাকে নাকচ করেছিলেন এই বলে যে, সম্পত্তির মৌলিক অধিকারের প্রশ্নের এটা বিরোধী। সেজন্য আমাদের খসড়া শাসনতন্ত্র প্রণেতাগণ অত্যন্ত সজাগ এবং সচেতন ছিলেন বলে এই শাসনতন্ত্রের তৃতীয়ভাগে ৪৭ নম্বর অনুচ্ছেদ প্রযোজিত হয়েছে। অর্থাৎ রাষ্ট্রের প্রয়োজনে এবং মৌলিক আদর্শের প্রয়োজনে রাষ্ট্রায়ত্ত করার আদর্শকে অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, ১৯৬৯ সালের ১৯ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ১৪টি প্রাইভেট ব্যাংকের ‘জাতীয়করণ’ করেছিলেন। এই ব্যাংকগুলো সম্মিলিতভাবে সমগ্র ব্যাংক খাতের ৮০-৮৫ শতাংশ সম্পদ নিয়ন্ত্রণ করত। এ নিয়ে মনোজ্ঞ বিবরণ পাওয়া যায় জয়রাম রমেশের ‘Intertwined lives : P.N. Haksar and Indira Gandhi’
বইতে।
সৈয়দ নজরুল ইসলাম পূর্বে উল্লেখিত ৪৭ অনুচ্ছেদের উপ-দফাগুলো কেন সংযোজিত হয়েছে তারও ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন সেদিন :
‘রাষ্ট্রের মূলনীতির একটা হল সমাজতন্ত্র। এই সমাজতন্ত্রের প্রয়োজনে যদি ব্যক্তিগত সম্পত্তির মালিকানা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে হয় এবং মৌলিক অধিকার যাতে এর পথে অন্তরায় হয়ে না দাঁড়ায়, সেজন্য অত্যন্ত দূরদৃষ্টি নিয়ে খসড়া শাসনতন্ত্র প্রণেতাগণ ৪৭ অনুচ্ছেদের (১) দফার সঙ্গে (ক), (খ), (গ), (ঙ) ও (চ) উপ-দফাগুলোকে এখানে সংযোজিত করছেন।’
অর্থাৎ, ‘লিবার্টি প্রিন্সিপল’ এবং ‘সোশ্যাল জাস্টিস প্রিন্সিপলের’ সঙ্গে কখনও সংঘর্ষ বাধলে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে জাস্টিস প্রিন্সিপলকে। গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র ধারণার মধ্যে ‘গণতন্ত্র’ এবং ‘সমাজতন্ত্র’ দুটি ধারণাই প্রায় সমান গুরুত্বপূর্ণ। তবে কোনো কোনো বিশেষ ক্ষেত্রে এ দুইয়ের মধ্যে-যেমন বৃহত্তর সামাজিক স্বার্থ ও ন্যায়বিচারের প্রশ্নে-কখনও বিরোধ দেখা দিলে প্রায়োরিটি পাবে সমাজতন্ত্রই। যেমন পেয়েছিল ৪৭ অনুচ্ছেদ-ব্যক্তিগত সম্পত্তির ওপরে মালিকানার মৌলিক অধিকারের গণ্ডিকে বা দাবিকে প্রয়োজনে অগ্রাহ্য করার ক্ষেত্রে। বাহাত্তরের সংবিধানের এই ‘র্যাডিকেল’ দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা করে উল্লেখ করার মতো। বঙ্গবন্ধু ও সংবিধান প্রণেতাগণ সাধারণ নির্বাচনী ‘বুর্জোয়া’ গণতন্ত্রের কথা বলছেন না।
[ক্রমশ]