পর্ব ::৪৫
[পূর্বে প্রকাশিতের পর]
‘জার্মান এক্সপ্রেশনিজম :প্রিমিটিভিজম অ্যান্ড মডার্নিটি’ বইয়ের লেখক জিল লয়েড এ বিষয়ে লিখেছেন যে জার্মান এক্সপ্রেশনিজমের ওপরে গভীর প্রভাব ফেলেছিল অজন্তার গুহাচিত্র :
‘Once again a composite notion of the ‘primitive’ emerges, and it is difficult to distinguish between the exotic and ‘Gothic’ stimuli. For example, the characteristic combination of green and purple that Kirchner began to use at this date is usually associated with the colour illustrations of the Ajanta temple paintings he knew from the Dresden library.’
রবীন্দ্রনাথ এই ‘প্রিমিটিভ’ ও ‘মডার্ন’-এর মধ্যকার প্রভাব-প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি এই উপমহাদেশের চিত্রকরদের মধ্যে সর্বপ্রথম অনুভব করেছিলেন। সমালোচকেরা বলেছেন, রবীন্দ্রনাথের নানা ছবির অদ্ভুত জীবজন্তুর সমাবেশ শুধু অন্যমনস্ক আঁকিবুঁকি (doodles) থেকে উৎসারিত হয়নি। উদাহরণত, তার ২২৩২-সংখ্যক ছবিটির সাথে তুলনীয় হয়েছে পল ক্লি-র ‘চিড়িয়াখানা’ ছবিটি। এই বিশেষ ছবিটি যখন ১৯৩০-এ প্যারিসে প্রদর্শিত হয়, তখন ব্যাখ্যা হিসেবে তাতে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন : ‘I have searched out the cave of the primitive/ in my mind/ with its etchings of animals.’ পরে কবি নিজেই দিয়েছেন এর বাংলা তর্জমা :’বিস্মৃত যুগে গুহাবাসীদের মন/ যে ছবি লিখিত ভিত্তির কোণে/ অবসরকালে বিনা প্রয়োজনে/ সেই ছবি আমি আপনার মনে/ করেছি অন্বেষণ।’ রবীন্দ্রনাথের ‘প্রিমিটিভ’ মনের প্রকাশ পাওয়া যায় ‘খাপছাড়া’ গ্রন্থে তার বিচিত্রবিধ ড্রইং-এর ভেতরেও। কাইয়ুম চৌধুরীও লিখেছেন, “পল ক্লির কলমে করা ড্রইংয়ের ছায়া ‘খাপছাড়া’ ও সে বইয়ের ইলাস্ট্রেশনে দেখতে পাওয়া যায়।”
আগেই বলেছি, চিত্রকলায় রবীন্দ্রনাথ যেদিকে পা ফেলেছিলেন তা তার নিজ দেশের সমসাময়িক শিল্পীদের মধ্যে বা শিল্পরসিক মহলে তেমন একটা নাড়া দিতে পারেনি। এদিক থেকেও রবীন্দ্রনাথ ছিলেন নিঃসঙ্গ শিল্পী। বিদেশেও তার বন্ধুদের অনেকেই এই নব্যধারার শিল্পকলার জগতের সাথে সম্যক পরিচিত ছিলেন না। এমনকি রোমাঁ রোলাঁ বা রোটেনস্টাইনের মতো রবি-ঘনিষ্ঠ প্রাচীনপন্থিরা। এখানেও তার নির্জনতা চোখে পড়ার মতো (ব্যতিক্রমদের মধ্যে ছিলেন পল ভালেরি বা ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর মতো ব্যক্তিত্বরা- সে প্রসঙ্গে একটু পরেই আসছি)। তার চিত্রকর্মকে ধৈর্য ধরে বোঝার চেষ্টা ছিল না প্রায় সমসামরিক কারও মধ্যেই- বিশেষত এ দেশে। প্রগতি-কল্লোল-পরিচয় যুগের আধুনিক কবিদের সাথে গদ্যকবিতা ও এলিয়ট নিয়ে তার যা-ও বা এক ধরনের সংলাপ বা বিতর্ক হচ্ছিল, চিত্রকলায় তিনি ছিলেন তার স্বদেশে প্রায় নির্বাসিত। ছবি আঁকাকে নিতান্ত কবির খামখেয়ালিপনা বলে মনে করা হতো। এ নিয়ে তার কিছু ক্ষোভও ছিল। থাকাটাই স্বাভাবিক। ১৯২২ সালে কলকাতায় সাম্প্রতিক ইউরোপীয় চিত্রকলার- বিশেষত ‘বাউহাউস’ স্কুলের এক্সপ্রেশনিস্ট চিত্রকর্মের যে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়- তার প্রধান প্ররোচনা ও উৎসাহ এসেছিল রবীন্দ্রনাথের তরফ থেকেই এ কথা এখন অনায়াসে বলা চলে। এ তথ্যও রয়েছে যে, ‘রবীন্দ্রনাথ নাকি শান্তিনিকেতনে বাউহাউস একটি শাখাও খুলতে চেয়েছিলেন।’ এই কলকাতা প্রদর্শনীর জন্য ‘বাউহাউস কর্তৃপক্ষ’ যেসব ছবি পাঠিয়েছিল তার মধ্যে ছিল অসাধারণ সব নাম :’পল ক্লির নয়টি জলরং, কান্ডিনস্কির চারটি জলরং, ফাইনিঙ্গারের উনিশটি ড্রইং ও ষোলোটি উডকাট, এটেনের তেইশটি ড্রইং, গেরহার্দ মার্কসের বিশটি জলরং, জর্জ ম্যুচের নয়টি এচিং, লোথার স্ট্ক্রেয়ারের সাতটি ছাপাই ছবি, সোফিয়ে কর্নারের দুটি জলরং, মাগ্রিট টেরি এডলারের কিছু কাজ প্রভৃতি।’ সুশোভন অধিকারী আরও জানিয়েছেন যে, ‘স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ নাকি পল ক্লি ও কান্ডিনস্কির একটি করে ছবি কিনেছিলেন।’ দুঃখের বিষয়, এ প্রদর্শনী শেষ হওয়ার পর বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও বাউহাউস কর্তৃপক্ষ উপরোক্ত কোনো একটি ছবিও ফেরত পায়নি! এমনকি, রবীন্দ্রনাথের ইতোপূর্বে ক্রয় করা ক্লি ও কান্ডিনস্কির ছবি দুটোরও কোনো হদিস মেলেনি। এত সবকিছুর পরও সমসাময়িক উপমহাদেশের চিত্রকলার ওপরে বাউহাউস প্রদর্শনীর প্রভাব খুব সামান্যই পড়েছিল, বা পড়ে থাকলেও তার প্রতিঘাত ভারতীয় চিত্রকলায় সঞ্চারিত হয়েছিল খুবই সন্তর্পণে। এটাও রবীন্দ্রনাথকে বিমর্ষ করে থাকবে। পরের আট বছরে কবি নিজেই যখন সর্বাধুনিক ধরনে ছবি আঁকতে লেগে গেলেন, সেটা নিয়েও উপর-ভাসা মন্তব্য ছাড়া কোনো গভীর সমাদরের আভাস পাই না আমরা। কাকা রবীন্দ্রনাথের ছবি প্রসঙ্গে শিল্পগুরু অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর একসময় বলেছিলেন, ‘ওগুলো ছবি নয়, যেন অগ্নিগিরির অগ্ন্যুৎসার।’ এ থেকে রবীন্দ্রনাথের ছবির কোনো মূল্যায়ন বুঝতে পারি না আমরা। গণেশ পাইন বলেছেন, ‘স্বদেশ তার চিত্রাবলীকে তাঁর ঈপ্সিত অভ্যর্থনা দেয়নি।’ এর একটা কারণ হতে পারে, আমাদের দেশে পাশ্চাত্যের আধুনিক ও সাম্প্রতিক চিত্রকলা সম্পর্কে যথেষ্ট পরিচয় না থাকা। রবীন্দ্রনাথের সেটা ছিল। গণেশ পাইন লিখেছেন, ‘পশ্চিমি নব্য শিল্পের নানা ধারার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের প্রত্যক্ষ এবং দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল, এ কথা আমরা জানি। …বহুবার গেছেন প্রতীচীর শিল্পতীর্থ পারী নগরীতে …নানা প্রদর্শশালায় দেখেছেন …ইম্প্রেশনিস্ট, পোস্ট-ইম্প্রেশনিস্ট, আর অ্যাবস্ট্র্যাক্ট আর্ট।’ ১৯২৫-এ সেজন্যেই রবীন্দ্রনাথ লিখতে পেরেছেন, ‘য়ুরোপে আজকাল চিত্রকলার ইতিহাসে একটা বিপ্লব এসেছে। …আধুনিক কলারসজ্ঞ মানুষ বলছেন, আদিকালের মানুষ তার অশিক্ষিত পটুত্বে বিরলরেখায় যে রকম সাদাসিধে ছবি আঁকত, ছবির সেই গোড়াকার ছাঁদের মধ্যে ফিরে না গেলে এই অবান্তরভারপীড়িত আর্টের উদ্ধার নেই।’ অর্থাৎ প্রিমিটিভ আর্টের প্রতারক সরলতার মধ্যে ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত আধুনিক শিল্পকলার ‘মুক্তি নেই’। এই উপলব্ধি যেমন সাম্প্রতিক শিল্পকলার জন্য ছিল গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি বিরলরেখার ‘মিনিমালিজমে’ ফিরে তাকানোও সমানভাবে দরকার ছিল।
রবীন্দ্রনাথ হুয়ান মিরোর (Joan Miro) মিনিমালিস্ট ও শিশু সারল্যে ভরা ছবিগুলো দেখেছিলেন কিনা আমরা জানি না। প্যারিসে অবশ্য মিরোর নামাঙ্কিত বাগানে রবীন্দ্রনাথের আবক্ষমূর্তি পরবর্তীতে স্থাপিত হয়েছে। মিরোর মতই ছবির সেই ‘গোড়াকার ছাঁদের’ দিকে ফিরে যাওয়ার একটা সচেতন চেষ্টা ছিল তার মধ্যে। কিন্তু এর যোগ্য সমাদর মেলেনি তার দৈশিক পরিপার্শ্বের কাছ থেকে। কলকাতায় তার ছবির প্রথম প্রদর্শনী সমসাময়িকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেনি। ১৯৩৭ সালে প্রকাশিত তার উপন্যাস ‘তিনসঙ্গী’র অভীক চরিত্রটি এ নিয়ে খেদোক্তি করেছে :’আমি যে আর্টিস্ট এ পরিচয়ে তোমাদের একটুও শ্রদ্ধা নেই। এ আমার চিরদুঃখের কথা। আমি নিশ্চিত করে জানি, একদিন সেই রসজ্ঞ দেশের গুণী লোকেরা আমাকে স্বীকার করে নেবে, যাদের স্বীকৃতির খাঁটি মূল্য আছে।’ শুধু উপন্যাসের মাধ্যমে নয়, এ কথা পত্রালাপেও জানিয়েছেন। প্যারিসে চিত্র-প্রদর্শনীর বছরেই কবি নিজেই এ কথা স্পষ্ট করে জানিয়েছিলেন নির্মলাকুমারী (রানী) মহলানবিশকে। প্রখ্যাত পরিসংখ্যানবিদ ও অর্থনীতিবিদ (পরবর্তীতে নেহরুর দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার ‘আর্কিটেক্ট’) প্রশান্তচন্দ মহলানবিশ-এর সহধর্মিণী বলে নয়, তার নিজস্ব মননশীলতার কারণেই রবীন্দ্রনাথের অন্যতম প্রিয় পাত্রী ছিলেন নির্মলাকুমারী। ১৯৩০ সালের আগস্ট মাসের এই চিঠিতে কবি জানাচ্ছেন :’জর্মনিতে আমার ছবির আদর যথেষ্ট হয়েছে। বার্লিন ন্যাশনাল গ্যালারি থেকে আমার পাঁচখানা ছবি নিয়েছে। এই খবরটার দৌড় কতটা আশা করি তোমরা বোঝো। …আমার দেশের সঙ্গে আমার চিত্রভারতীর সম্বন্ধ নেই বলে মনে হয়। …ছবি যখন আঁকি তখন রেখা বলো রঙ বলো কোনো বিশেষ প্রদেশের পরিচয় নিয়ে আসে না। অতএব, এ জিনিসটা যারা পছন্দ করে তাদেরই, আমি বাঙ্গালি বলে এটা আপন হতেই বাঙ্গালির জিনিস নয়। এই জন্যে স্বতঃই এই ছবিগুলিকে আমি পশ্চিমের হাতে দান করেছি। …আমি যে শতকরা একশো হারে বাঙ্গালি নই, আমি যে সমান পরিমাণে য়ুরোপেরও, এই কথাটারই প্রমাণ হোক আমার ছবি দিয়ে।’ শেষের লাইনটি লক্ষ্য করার মতো। এই কথা শতভাগ খাটে শুধু রবীন্দ্রনাথ নয়, অমর্ত্য সেন, রণজিৎ গুহসহ সব প্রাগ্রসর বুদ্ধিজীবীর ক্ষেত্রে। এদেরকে কোনো ‘জাতীয়তাবাদী’ কালো বাক্সে বন্দি করা যাবে না।
এই একই কথা বলেছেন ১৯৩০ সালে সুধীন্দ্রনাথ দত্তকেও। জার্মানিতে তার ছবিগুলো দেখে সবাই খুব প্রশংসা করেছে, অথচ দেশে সেগুলো গুরুত্ব পায়নি :’আশা হচ্ছে এগুলো রসিকের দৃষ্টিগোচর হবে। পণ করেচি “আমার জন্মভূমিতে” ফিরিয়ে নিয়ে যাব না- অযোগ্য অভাজনদের স্থূল হস্তাবলেপ অসহ্য হয়ে এসেচে।’ ইন্দিরা দেবীকে লিখেছেন নিজের ছবি সম্পর্কে- বিদেশের মাটিতেই ছবিগুলো রেখে দিতে চান :’আমার পরম সৌভাগ্য এই যে আমাদের নিজপারের ঘাট পেরিয়ে এসেচি। আমার এই শেষ কীর্ত্তি এই দেশেই রেখে যাব।’ রানী মহলানবিশকে এমনভাবে বলেছেন যেন এ বিষয়ে তিনি স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছে গেছেন :’আমার ছবিগুলোকে স্বদেশে কদাচ নিয়ে যাব না- পশ্চিম সাগরের পারে সমস্ত উজাড় করে দিয়ে তবে ফিরব।’ ততদিনে চিত্রকলা যে তার ‘শেষ কীর্ত্তি’ সেটা আমাদের জানা হয়ে গেছে। এর কারণও লিখেছেন- ‘যাই হোক ইন্ডিয়ান আর্ট যাকে বলে সেটা আমার আনাড়ি কলমে প্রকাশ পায়নি’, অর্থাৎ প্রথাগত ভারতীয় চিত্রকলা বলতে যে ‘রিয়ালিস্টিক’ ধরনের শিল্পকর্ম বোঝানো হয়ে থাকে (রবি বর্মা যার বড় উদাহরণ ছিলেন উনিশ শতকের শেষ ভাগে), সে রকম আদৌ নয় রবীন্দ্রনাথের চিত্রকর্ম। বা অবনীন্দ্রনাথ-নন্দলাল প্রতিষ্ঠিত ‘বেঙ্গল স্কুলের’ আর্টের ধারাতেও তিনি নেই। আর সেজন্যেই এটা হয়তো পাশ্চাত্যের রসজ্ঞ মহলে বিশেষ আগ্রহের বিষয়বস্তু হতে পারে। ফ্রান্সে তার ছবির প্রদর্শনী নিয়ে ইন্দিরা দেবীকে ২৭ মে ১৯৩০ তারিখে লিখেছেন, ‘ফ্রান্সের মত কড়া হাকিমের দরবারেও শিরোপা মিলেচে- কিছুমাত্র কার্পণ্য করেনি’, আর জার্মানিতো তার দ্বার খুলে দিয়েছে বার্লিনের ন্যাশনাল গ্যালারিতে রবীন্দ্রনাথের ছবি কিনে। এজন্যেই রানী মহলানবিশকে লেখা ১৮ আগস্ট ১৯৩০-এর চিঠিতে চিত্রকর রবীন্দ্রনাথ বলতে দ্বিধা করেননি যে ‘এই যাত্রায় আগেরবারের চেয়ে জর্মনির অন্তঃপ্রকৃতির মধ্যে আমার প্রবেশাধিকার ঘটেছে। ওদের কাছাকাছি এসেছি।’ ১৯১৬ সালে কবি তার কন্যা মীরা দেবীকে লিখেছিলেন, ‘চিত্রবিদ্যা ত আমার বিদ্যা নয়, যদি তা হত তাহলে একবার দেখাতুম আমি কি করতে পারতুম।’ শেষ পর্যন্ত উক্ত চিঠি লেখার ১৪ বছরের মধ্যেই তিনি দেখিয়ে ছেড়েছিলেন যে চিত্রকলার শাখাতেও তিনি কতটা স্বতন্ত্র, মৌলিক এবং সর্বাধুনিক হতে পারেন।
এ সবকিছুই অবশ্য হতো না যদি তিনি ঠিক সময়ে তার আর্জেন্টিনার ‘বিজয়া’ তথা ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর সমর্থন ও সহায়তা না পেতেন। ‘প্যারিস ১৯৩০’ মানেই ওকাম্পো ও রবীন্দ্রনাথের প্যারিস- এটা বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে। এই গল্পের বীজ বোনা হয়েছিল আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এয়ার্সের অদূরের সাবার্বে সান-ইসিদ্রার এক নির্জন প্রাসাদোপম বাড়িতে (প্রায় দুই মাস ছিলেন কবি যেখানে ভিক্টোরিয়ার ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে)। তখন বিজয়ার বয়স ৩৪, রবীন্দ্রনাথের বয়স ৬৩। এই সাক্ষাৎ-এর কয়েক বছরের মধ্যেই তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছিল।
[ক্রমশ]