পর্ব ::৪২
[পূর্বে প্রকাশিতের পর]
পিকাসোর ‘আফ্রিকা’ দিয়েই আমি শুরু করতে চাই। যদিও পিকাসোর আগে ‘শুরুটা’ হয়েছিল। কে সূচনা করেছিলেন, সে নিয়ে বিতর্ক আজও চলছে- মরিস ভদ্মামিঙ্ক (Maurice Vlamnck) এবং অন্দ্রে দেরাঁ (Andre Derain) দিয়েই। ১৯০৬ সালের শুরুর দিকে প্যারিসের একটি প্রদর্শনী থেকে দেরাঁ আফ্রিকার গ্যাবন দেশের একটি ‘ফ্যাং মুখোশ’ (Fang Mask) কেনেন। এরা দু’জনেই ছিলেন ইম্প্রেশনিজমের পরের উল্লেখযোগ্য আন্দোলন ‘ফভ মুভমেন্টে’র সদস্য (Fauve painters নামে প্রসিদ্ধ)। ফরাসি ‘Fauve’
শব্দের অর্থ বন্য পশু, শিল্পকলার জগৎকে এক দানবিক শক্তি দিয়ে ছত্রভঙ্গ করতে চেয়েছিলেন তারা; এই আন্দোলন ক্ষণস্থায়ী হয়েছিল- ১৯০৪ থেকে শুরু হয়ে ১৯১০ পর্যন্ত গড়িয়েছিল। কিন্তু এর সঙ্গে জড়িত কুশীলবরা পরবর্তীকালে সেজান-পরবর্তী আধুনিক চিত্রকলার নানান দিগন্ত খুলে দিয়েছিলেন। কে নেই এর মধ্যে? মাতিস, ব্রাক, রুয়ো (Roualt), এমনকি সামান্য কালের জন্য ‘নীল পর্বের’ পিকাসো স্বয়ং। এদের কিছু মৌলিক (অ-স্বাক্ষরিত) ‘লিথোগ্রাফ’ আমার সংগ্রহে রয়েছে। এই ফভ পর্ব যখন তুঙ্গে, তখনই আফ্রিকার ‘প্রিমিটিভ’ আর্টের প্রভাব এসে পড়ে প্যারিসের তরুণ শিল্পীদের মধ্যে। ফ্যাং মুখোশ কেনার কিছুদিনের মধ্যে মাতিস বেড়াতে যান আলজেরিয়ায়। সেখানে পশ্চিম আফ্রিকার বিভিন্ন ভাস্কর্য (এবং ‘মুখোশ’) তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বস্তুত আমরা পিকাসোর ‘আফ্রিকা-পর্বের’ কথা আগে শুনেছি, কিন্তু মাতিসের আফ্রিকা-আবিস্কার প্রায় অজানা বা অচর্চিতই থেকে গেছে। ১৯০৬ সালের আলজেরিয়া ভ্রমণের পর মাতিসের আঁকার ধরনই বদলে গেল। উদ্ৃব্দতিটি তুলে দিচ্ছি : ‘Exposure to north African art, with its wealth of decorative patterns, helped him to simplify his drawing and I berate liberate color from its descriptive function. The trip also focused his attention on the arabesque an elegant, harmonies, S-shaped linear motif that plays a prominent part both in Islamic art and in the European academic tradition.’ এই প্রভাব এসে পড়েছিল মাতিসের Nude by the sea (১৯০৯) চিত্রকর্মে, যেখানে মোটা বলিষ্ঠ তুলিতে কালো রঙে দেহের অবয়ব স্পষ্ট করে তোলা হয়েছে। এই ছবিতে দাঁড়ানোর ভঙ্গিটি কাঠের স্থির ভাস্কর্যের মতো- অবিকল পশ্চিম আফ্রিকার দণ্ডায়মান কালো কাঠের নারী মূর্তি। কুই ব্রানলি মিউজিয়ামে এ রকম অনেক নিদর্শন ছড়ানো। তবে আলজেরিয়া ভ্রমণের তুলনায় আরও বেশি স্পষ্ট করে আফ্রিকার প্রভাব অনুভূত হয় ১৯০৭ সালের চিত্রকর্মে, যার নাম ‘স্ট্যান্ডিং নুড’। এখানে ট্রাইবাল আর্ট, যেটা ছিল কাঠের বা প্রস্তর মূর্তি আবক্ষ, তাকে অনুবাদ করা হয়েছে রংতুলির ভাষায়- অয়েল পেইন্টিংয়ের ক্যানভাসে। ভাস্কর্য ও মুখোশ থেকে ক্যানভাসে স্থানান্তর- সংক্ষেপে এভাবেই হয় ট্রাইবাল প্রিমিটিভ আর্টের ইউরোপীয় আধুনিক চিত্রকলায় ‘আত্তীকরণ’। এর পেছনে একটি ছোট ইতিহাস রয়েছে। শিল্প সংগ্রাহক ও সমালোচক গেরট্রুড স্টেইন ছিলেন পিকাসো ও মাতিস দু’জনেরই বন্ধু। প্যারিসে অবস্থানকালে মার্কিন এই রমণী সমসাময়িক তরুণ শিল্পী-সাহিত্যিকদের আড্ডার আসরে মধ্যমণি হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন- তার আতিথেয়তা, বুদ্ধিমত্তা ও উষ্ণ সহায়-সমর্থনের জন্য। পিকাসো তাকে নিয়ে প্রতিকৃতি এঁকেছিলেন তার বিখ্যাত জ্যামিতিক ধারার ভাঙচুর ও ডি-কনস্ট্রাকশনের কিউবিক পদ্ধতিতে। মাতিস একবার গেরট্রুডের বাসায় যাওয়ার পথে এন্টিক শপ থেকে আফ্রিকার ছোট একটি স্ট্যাচু সংগ্রহ করেন। সেদিন গেরট্রুডের বাসায় উপস্থিত ছিলেন পিকাসোও। আফ্রিকার ট্রাইবাল ভাস্কর্য নিয়ে মাতিস-পিকাসোর আলাপ একটি নতুন আন্দোলনের সূচনা করে। মাতিস বলেন, ইউরোপীয় ভাস্কর্যে খুব বেশি জোর দেওয়া হয়েছে, যাকে আঁকা হয়েছে তার বর্ণনার প্রতি, বিশেষত তার শরীরের গঠন-মাংসপেশি ইত্যাদি অনুষঙ্গের ওপরে। কিন্তু, দ্যাখো, আফ্রিকার ট্রাইবাল মূর্তিগুলোকে- মনে হচ্ছে কাঠ, পাথর বা মাটির ‘ম্যাটেরিয়াল’ যা-ই হোক না কেন, সেখান থেকে সরাসরিভাবে যেন কেটে তোলা হয়েছে এদের। শিল্পীর মেজাজ অনুযায়ী জ্যামিতিক ফর্ম, দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে তুলনামূলক অনুপাত বেশ-কম করার ক্ষেত্রে বেশ স্বাধীনতা দেখতে পাই। ইউরোপীয় ভাস্কর্যে শরীর যেখানে ফিজিওলজির আঁটোসাঁটো গড়নের মধ্যে বন্দি, আফ্রিকার ভাস্কর্য সে তুলনায় অনেকটাই স্বাধীন। এই স্বাধীনতার দিকটি পিকাসো ও মাতিস উভয়েরই খুব মনে ধরেছিল। ভাস্কর্য শিল্পীর মনের ইচ্ছেকে প্রকাশ করছে- যাকে উপলক্ষ করে ভাস্কর্য গড়ে তোলা হচ্ছে, তা আর তার মুখ্য আগ্রহের বিষয়বস্তু থাকছে না। এটা দু’জনের কাছেই বিস্ময়কর আবিস্কার মনে হয়েছিল। পরবর্তীকালে Die Brucke (মানে, ‘সেতু’) আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত এরিখ হেকেল, এমিল নলডে, এর্নস্ট কিরশ্নের প্রমুখেরা আফ্রিকার প্রিমিটিভ আর্টের প্রভাবে ইউরোপীয় চিত্রকলার মধ্যে ‘এক্সপ্রেশনিজমে’র ধারা সূচনা করেছিলেন। উদাহরণ হিসেবে আমরা মাতিসের বিরল ভাস্কর্য (তিনি খুব বেশি ভাস্কর্যের কাজ করেননি) ‘দ্য সারপেন্টাইন’ ও কিরশনের-এর ‘দ্য ড্যান্সিং ওমেন’-এর উল্লেখ করতে পারি।
প্রিমিটিভ আর্টের প্রভাব মাতিসের শিল্পকলায় আমৃত্যু সঞ্চারিত হয়েছিল। এখন যাকে বলে ‘টেক্সটাইল আর্ট’, তারও মূল প্রেরণা এসেছিল আফ্রিকা থেকে। আফ্রিকা ছাড়াও পাপুয়া নিউগিনি এবং পলিনেশীয় কাপড়ের ‘ইন্ট্রিকেট’ জ্যামিতিক ডিজাইন আধুনিক শিল্পকলাকে নাড়া দিয়ে গেছে। মাতিসের শোবার ঘরের একটা দেয়ালজুড়ে ছিল এসব দেশ থেকে সংগ্রহ করা ‘টেক্সটাইল’ শিল্পকর্ম। কাপড়ের বাহারি প্যাটার্নের নকশা মাতিস তার ক্যানভাসের চিত্রকর্মের মধ্যে প্রায়ই ব্যবহার করেছেন- অবশ্যই নিজস্ব উজ্জ্বল রঙের ফোয়ারা তুলে। ‘মাতিস ঈশ্বরের পরেই সবচেয়ে ভালো রঙের ব্যবহার করতে জানেন’- এই কথাটা পিকাসো সংগত কারণেই বলেছিলেন। সেই মাতিস আফ্রিকার ‘কুবা’ (Kuba) কাপড়ের জ্যামিতিক নকশা দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন, ‘I never fire of looking at even the simplest of them, and waiting for something to come to me from the mystery of their instinctive geometry… I can’t wait to sea what the tapa will reveal to meÑ for its perfection’. সাম্প্রতিক কালের উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি, রতন মজুমদারের আশির দশকের সাদা-কালো ছাপচিত্রে এই প্রিমিটিভ ও ট্রাইবাল ‘টেক্সটাইল আর্টের’ মনোমুগ্ধকর প্রভাব দেখতে পাওয়া যায়। অন্যবিধ প্রভাবও মাতিস নিজের মধ্যে আত্মস্থ করে নিয়েছিলেন। পল গগাঁর তাহিতি-সিরিজের চিত্রকর্মের মতো মাতিসেরও নিজস্ব স্মৃতি ছিল তাহিতি নিয়ে। ১৯৩১ সালে ষাট বছরের মাতিস তাহিতিতে বেড়াতে যান। প্রশান্ত মহাসাগরের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে গঠিত ‘পলিনেশিয়া’ অঞ্চল (French Polynesia হিসেবে চিহ্নিত)। সেখান থেকে মাতিস নিয়ে আসেন নানা ধরনের পোশাক (Tapa Cloths), স্থানীয় রমণীদের পরনের স্কার্ট (Pareos) এবং অ্যাপ্লিকের কাজ করা কাপড় (স্থানীয় ভাষায় Tifaifai নামে পরিচিত)। সেইসঙ্গে এসেছিল যত রাজ্যের শঙ্খ, ঝিনুক ও প্রবাল পাথর। পলিনেশিয়া মাতিসের চিত্রকর্মকে জল ও আকাশের গন্ধ ও বর্ণ ধার দিয়েছিল- তার ট্রেডমার্ক নীল পটভূমিতে আঁকা সাদা জল, মাছ, ঝিনুক, কোরাল ও শঙ্খমালা। পরবর্তীকালে এই চিত্রকর্মগুলো রূপান্তর হবে তার মৃত্যুর আগের মাসগুলোয় করা বিখ্যাত ‘কাটআউট’ সিরিজে। নানা রঙের কাগজ কেটে মিলিয়ে মিলিয়ে বানানো একান্তভাবে তারই উদ্ভাবিত অশ্রুতপূর্ব শিল্পকর্ম। এ নিয়ে আমি সাক্ষী-সাবুদ উপস্থাপন করতে পারি এখানে। কবি ও ঔপন্যাসিক লুই আরাগঁ ‘মাতিসের তাহিতি’ প্রসঙ্গে এভাবে বলেছেন :
‘Whoever knows Matisse is constantly aware of the influence of that distant island on his thoughts… he tells of the light of Tahiti, the lagoon, the transparent water, the fish and the Corals in that undersea light which is like a second sky.’ তার ওশেনিয়া (Oceania) ও পলিনেশিয়া (Polynesia) সিরিজ এভাবেই গড়ে উঠেছিল। তাহিতি মাতিসকে দিয়েছিল শুদ্ধতম চিত্রকর হয়ে ওঠার সিঁড়ি। পলিনেশিয়ার এক দ্বীপে মাত্র তিন সপ্তাহ থেকেই তার মনে হলো তিনি যেন সেই সিঁড়ির ধাপগুলো দেখতে পাচ্ছেন। সহকর্মী চিত্রকর পিয়ের বনার্ডকে (Bonnard)
তিনি লিখলেন, ‘Just 20 days on a coral island: pure light, pure air, pure colour: diamond sapphire emerald turquoise. Fabulous fish.’ প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখি, (এক বিষ্ণু দে-কে বাদ দিলে) পরবর্তীকালে শামসুর রাহমানের কবিতার যতিচিহ্নের মতো ক্রমাগত উল্লেখ করা হবে সেজান, মাতিস, ব্রাক ও পিকাসোর কথা। তার বিশ্বকে লাল-নীল-সবুজ নানা রঙে বর্ণিল করবেন এই Fauve চিত্রশিল্পীরা। শামসুর রাহমানের কবিতায় আধুনিক চিত্রকলা একটি আগ্রহের থিম। সেখানে আরও যুক্ত হবে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের শিল্পীরা :যামিনী রায় থেকে জয়নুল; শাগাল ও কান্ডিনস্কি থেকে শুরু করে মিরো ও ডালি। সেটি নিজস্ব মূল্যেই একটি পৃথক ও একান্ত মনোযোগের বিষয়, যা বর্তমান আলোচনার বাইরে থাকল।
অনাবিস্কৃত মাতিসে এশিয়া-আফ্রিকার প্রসঙ্গ প্রচ্ছন্নে থাকলেও ‘পিকাসোর আফ্রিকা’ বহুদিন ধরেই একটি চর্চিত বিষয়। সমালোচক ও সহচিত্রশিল্পীরা সবাই বলেছেন যে, কিউবিজমের পেছনে একটি প্রেরণা যেমন- বিজ্ঞান (বিশ্বের ‘ত্রিমাত্রিক’ ভিউ, যা দ্বিমাত্রিক ক্যানভাসের তলদেশ থেকে ত্রিমাত্রিক অবয়ব ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা), তেমনি অন্য একটি উৎসাহ এসেছিল আফ্রিকার প্রিমিটিভ ও ট্রাইবাল আর্ট-ফর্ম থেকে। আদিবাসীদের ভাস্কর্যের মধ্যে শারীরিক উপস্থাপনায় সচেতনভাবে বৈসাদৃশ্য, সামঞ্জস্যহীনতা, প্রতিতুলনা ও কর্কশতাকে (কুৎসিত নয়) প্রাধান্য দিয়ে ফর্মের সচেতন ভাঙচুর করা হয়েছে। অথচ তাতে করে নান্দনিক রসে ব্যাঘাত ঘটেনি :খাপছাড়া, কিন্তু সুন্দর কাছে এসে দাঁড়িয়েছে। ভাঙচুর করে পুনর্নির্মাণ, একটি প্রচলিত শিল্পপদ্ধতিকে ভেঙে দেখার নতুন চোখ তৈরি করা (পাঠকের মনে পড়বে ‘Eye of Picasso’ গ্রন্থটি)- এটি আফ্রিকার তথাকথিত ‘প্রিমিটিভ’ আর্ট তাকে শিখিয়েছিল। কিন্তু পিকাসো নিজে এই ঋণ স্বীকার করতে আগ্রহী ছিলেন না। আফ্রিকার টোটেম তার সর্বাধুনিক কিউবিজমকে প্রেরণা জুগিয়েছে- এ কথা তিনি থিসিস আকারে বলতে পারতেন। কিন্তু বলেননি। এ নিয়ে তার স্ত্রী (যিনি নিজেও একজন উল্লেখ করার মতো শিল্পী) ফ্রাঁসোয়া জিলোট (Gilot) রাখঢাক না করেই প্রায় এভাবে বলেছেন, ‘যারা পিকাসোকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন, তারাই বুঝবেন কেন পিকাসোর মুখ দিয়ে ওই স্বীকারোক্তিটি বেরোয়নি। আসলে তিনি এ ব্যাপারে কেন, কোনো কিছুর জন্যই কারও কাছেই জীবনে কোনো ঋণ স্বীকার করতে চাননি।’ জিলোটের সঙ্গে পিকাসোর পরবর্তীকালে অবশ্য ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় (তার বৈষয়িক জীবনে এ রকম ছাড়াছাড়ির ঘটনা পৌনপুনিক)। ফলে এই ব্যাখ্যাকে পিকাসোর প্রতি সংবেদনশীল বলে গ্রহণ করা শক্ত।
আফ্রিকার ‘কোটা’ (Kota) ভাস্কর্যের প্রভাবে আঁকা হয়েছিল পিকাসোর বিভিন্ন চিত্রকর্ম। এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত ‘ড্যান্সার অব আভিগনন্’ ও ‘থ্রি উইমেন’ চিত্রকর্ম দুটি। কিউবিস্ট মোটিফে করা ‘গিটার’ও আরেকটি উদাহরণ। কীভাবে আফ্রিকার শিল্পকলার প্রতি পিকাসো আকৃষ্ট হন, সে গল্প জিলোটকে শুনিয়েছিলেন শিল্পী নিজেই। ১৯০৭ সালের শুরুতে প্যারিসের ‘ট্রকাদেরো মিউজিয়ামে’ (যেটি এথনোগ্রাফি মিউজিয়াম নামেও পরিচিত) হঠাৎ করেই তার চোখে পড়ে যায় আফ্রিকা থেকে সংগৃহীত একটি মূর্তি।
[ক্রমশ]